পাতা:অপরাজিত - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Togurus Sct নোটিশ-মত অপর কাজ ছাড়িবার আর বিলব নাই, একদিন পোস্টাফিসের ডাক-ব্যােগ খালিয়া খাম ও পোস্টকাডাগলি নাড়িতে-চাড়িতে একখানা বড়, চোকা সবজি রংয়ের মোটা খামের ওপর নিজের নাম দেখিয়া বিস্মিত হইল-কে তাহাকে এত বড় শৌখিন খামে চিঠি দিল ! প্রণব নয়, অন্য কেহ নয়, হাতের লেখাটা সম্পপণ্য অপরিচিত।

  • খালিয়া দেখিলেই তো তাহার সকল রহস্য এখনই চলিয়া যাইবে, এখন থােক, বাসায় গিয়া পড়িবে এখন । এই অজানার আনন্দন্টুকু যতক্ষণ ভোগ করা যায় । A

রান্না-খাওয়ার কাজ শেষ হইতে মাটিন কোম্পানীর রাত দশটার গাড়ি আসিয়া পড়িল, বাজারের দোকানে দোকানে ঝাঁপ পড়িল । অপ, পত্রখানা খালিয়া দেখিল- দখোনা চিঠি, একখানা ছোট চার-পাঁচ লাইনের, আর একখানা মোটা সাদা কাগজে-পরীক্ষণেই আনন্দে, বিস্ময়ে, উত্তেজনায় তার বকের রপ্ত যেন চলাকাইয়া উঠিয়া গেল মাথায়-সবনাশ, কার চিঠি এ ! চোখকে যেন বিশবাস করা যায় না-লীলা তাহাকে লিখিতেছে! সঙ্গের চিঠিখানা, তার ছোট ভাইয়ের -সে লিখিতেছে, দিদির এ-পত্রখানা তাহার পত্রের মধ্যে আসিয়াছে, অপকে পাঠাইবার অন্যুরোধ ছিল দিদির, পাঠানো হইল । অনেক কথা, ন’ পাঠা ছোট ছোট অক্ষরের চিঠি ! খানিকটা পড়িয়া সে খোলা হাওয়ায় আসিয়া বসিল । কি অবণনীয় মনোভাব, বোঝানো যায় না, বলা যায় না !! আর্যভটা এই রকমভাই অপােব, অনেকদিন তোমার কোন খবর পাই নি- তুমি কোথায় আছে, আজকাল কি কর, জানিবার ইচ্ছে হয়েছে অনেকবার কিন্তু কে বলবে, কার কাছেই বা খবর পাব ? সেবার কলকাতায় গিয়ে বিনকে একদিন তোমার পরানো ঠিকানায় তোমার সেখানে পাঠিয়েছিলাম – সে বাড়িতে অন্য লোকে আজকাল থাকে, তোমার সন্ধান দিতে পারে নি, কি করেই বা পারবে ? একথা বিন বলে নি তোমায় ? আমি বড় অশান্তিতে আছি। এখানে, কখনও ভাবি নি এমন আমার হবে । কখনও যদি দেখা হয় তখন সব বলব। এই সব অশান্তির মধ্যে যখন আবার, মনে হয় তুমি হয়ত মলিনমখে কোথায় পথে পথে ঘরে বেড়ােচ্ছ- তখন মনের যন্ত্রণা আরও বেড়ে যায়। এই অবস্থায় হঠাৎ একদিন বিনার পত্রে জানলাম বিজয়া দশমীর দিন তুমি ভবানীপরের বাড়িতে গিয়েছিলে, তোমার ঠিকানাও 乙°闭国: বধমানের কথা মনে হয় ? অতি আদরের বধমানের বাড়িতে আজকাল আর যাবার জো নেই। জ্যাঠামশায় মারা যাওয়ার পর থেকেই রমেন-দা বড় বাড়াবাড়ি ক’বে তুলেছিল। আজকাল সে যা করছে, তা তুমি হয়ত কখনও শোনও নি । মানষের ধাপ থেকে সে যে কত নীচে নেমে গিয়েছে, আর যা কাঁতিকারখানা, তা লিখতে গেলে পথি হয়ে পড়ে । কোন মারোয়াড়ীর কাছে নিজের অংশ বন্ধক রেখে টাকা ধার করেছিল- এখন তার পরামশে পাটিশন স্যুট আরম্ভ করেছে