পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/৩৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সেই ঘর কখানি, সেই তেঁতুলতলার ঘাট, তেপান্তর মাঠ, হাসপুকুরের কাদা জল, তাতে শালুক ফুল, বাড়ির ধারে ঝুমকো-লতার মাচা, তার উপরে হুগগা টুনটুনি পাখিটি, উঠোনের কোণে তুলসীমঞ্চটি, কালে মাটি-লেপা ঘরের দেওয়াল তার উপরে মায়ের হাতে লেখা লক্ষ্মীপুজোর আলপনা, দড়ির আলনায় বাপের কোচানো চাদর, পুরোনো শোবার তক্তা তার উপরে শীতলপাটি আর লাল ঝালর দেওয়া তালপাতার পাখাখানি । সব আজ পরিষ্কার যেন রিদয় চোখে দেখতে লাগল, আর থেকে-থেকে মন তার ঘরে যেতে আকুলি-বিকুলি করতে থাকল —সকাল কেটে দুপুর হয়েছে, তখনো রিদয় আকাশের দিকে চেয়ে ঘরের কথা ভাবছে —দলে-দলে কত পাখির বাক দেশমুখে চলে গেল –‘চল-চল চলরে চল বলতেবলতে । নাটবাড়ির জলায় যত পাখি — কাদাখোচা জলপিপি কামি কোড়া কঙ্ক পালতির কুঁচেবক আর মৎস্য বঙ্ক । ডাহুক ডাহুকি আর খঞ্জনী খঞ্জন সারস সারসী যত বক বকীগণ । তিত্তির তিত্তর পানিকাক পানিকাকী কুরবী কুরল চক্রবাক চক্রবাকী । সবাই দলে-দলে দেশমুখে উড়ে পড়ছে! রিদয় দেখলে মাথার উপর দিয়ে কত পাখির বাক দেশ-বিদেশ থেকে, কেউ বন ছেড়ে, কেউ খাচা ভেঙে হু-হু করে দেশে চলেছে – ময়না শালিকা টিয়া তোতা কাকাতুয়া চাতক চকোর নুরী তুরী রাঙ্গাচুয়া । ময়ুর ময়ুরী সারিশুক আদি খগ কোকিল কোকিলা আদি মরাল বিহগ । সীকর বহর বাসা বাজ তুরমুতি ৩২৯