পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ধরে মাটিতে মুখ ঘৰে দিতে চাচ্ছে। এতক্ষণ পেচা সব রোয় ফুলিয়ে বিকট চেহার করে বসে ছিল, দেখতে দেখতে ফুটে রবারের গোলার মতে চুপসে গেল, যেন কতদিন খায় নি। মুখে কারু কধা সরছে না, কেবল চোখ পিটপিট করে এ ওকে শোধাচ্ছে, ‘হল কী । কী ব্যাপার । তার পর ডান মেলে একে একে সবাই পালায় দেখে চড়াই বললে, ‘এরি মধ্যে চললে নাকি ’ চড়ায়ের কথা কে-ইব৷ শোনে। চড়াই যত বলে, ‘ভোর হতে এখনো দেরি, চলুক না ঘোট আরো খানিক । সব পেচা চোখ পিটপিট করে বলে, ‘ন না না, আর না, আর না, আর না । হুতুম বললে, ‘গেলুম। ধুধুল বললে, মলুম। বাচাও বাচাও। বলছে আর সব পেচাগুলো । তাড়াতাড়িতে কোথায় যাবে, কী করবে ঠিক পাচ্ছে না,কানার মতো কখনো কাট-গাছে গিয়ে পড়ছে, কখনো পাথরে টঙ্কর খাচ্ছে। আর ডান দিয়ে চোখ-মুখ ঘষছে আর বলছে, উঃ গেছি । উঃ গেছি।’ ‘লাগছে লাগছে।’ বলতে বলতে একে-একে সব পেচা চম্পট দিলে । সবশেষ হুতুম পেচাটা গেলুম। গেলুম। বলতে বলতে উড়ে পালাল । চড়াই দেখলে অন্ধকারের মধ্যে কালো কালো নৌকার মতো দলে দুলে পেচা গ্রাম ছাড়িয়ে ক্রমে পাহাড়ের গায়ে মিলিয়ে গেল । আর কেউ কোথাও নেই, পাকুড়তলা সে এক রয়েছে। ফিজর তো হল এখন ছোটো হাজরির জন্যে একটা গঙ্গাফড়িং পেলে হয় ভালো ’ বলে চড়াই এদিক ওদিক করছে, এমন সময় একটা ঝোপের আড়াল থেকে ঝপ করে সোনালিয়া বেরিয়ে এল। চড়াই অবাক হয়ে বললে, ‘একী। এত রাত্রে আপনি এখানে ? সোনালিয়া একটু দূরে থেকে পেচাদের যুক্তি সমস্ত শুনেছিল, সে হাপাতে হাপাতে বললে, কী ভয়ানক ব্যাপার, চড়াই তো কুঁকড়োর বন্ধু, এখন বন্ধুকে বাচাতে চেষ্টা তো তার করা উচিত? চড়াই আবার ফড়িং-এর সন্ধান করতে করতে বললে, পেচা ভাজা খেতে কী মজ। তা পাখিজন্মে তারা কেউ জানলে না –’ 8रे