পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাড়াবাড়ি কোরো না ? কুঁকড়ে সে কথায় কান না দিয়ে বলে চললেন, সূর্যের দিকে চেয়ে, ‘এরা কি সত্যিকার মোরগ। কখনোই নয়। কোথায় এদের মধ্যে সেই সকালের আলো, সেই রক্তের মতো রাঙা মুর । সূর্য তুমি সাক্ষী, এরা দেখতে হরেক রকমের বটে, কিন্তু মিথ্যে ছায়া-বাজি বৈ সত্যি নয়, সত্যি নয়। আর ছায়াবাজিরই মতো এরা তামাশা দেখিয়ে কোথায় মেলাবে তার ঠিক নেই। এদের কেউ বেঁচে থাকবে না, হ-রে-ক-র-ক-ম-বা-জি-বা-হ-ব’ ব’লে কুঁকড়ে একটু থামলেন। ময়ুর শোধালে, ‘কাকে তুমি সত্যিকার মোরগ বল শুনি ? সত্যিকার মোরগ তাকেই বলি যার একমাত্র ধ্যান হল, ব’লে কুঁকড়ে চুপ করলেন। সব পাখিই অমনি শুধোলে, কী কী ? ধ্যান হল কী ? কুঁকড়ে বুক-ফুলিয়ে বললেন, ‘আলোর ফুলকি—ই-ই—’ সব পোশাকী মোরগ অমনি বাজখাই গলায় বলে উঠল, “কা-লোকু-ল চুর। ই, হঁ। এই তো চোখ বুজলেই আমরা সরষে-ফুলের মতো গুড়ো গুড়ে কী যেন দেখতে পাচ্ছি। বাঃ এ তো সবাই ধ্যান করে, নতুনটা কী হল ? ব’লে মোরগগুলো কুঁকড়োকে প্রশ্ন করতে লাগল, তিনি ওড়বে না খাড়বে না নাদে গলা সাধেন ? তিনি দক্ষিণী চালে গান করেন না হনুমানের মতে । কোন রাগে তার দখল বেশি। কুঁকড়ে সংগীতশাস্ত্র, স্বরলিপি এ-সবের ধার দিয়েও যান নি ; তিনি প্রশ্ন শুনে অবাক হলেন । কুঁকড়ো গাইবে কুঁকড়োর মতে, হনুমানের মতে কেন যে হনুমান ছাড়া আর কেউ গাইতে যাবে কুঁকড়ে তা বুঝে উঠতে পারলেন না। এক মোরগ বললে, ‘রোসো, তালটা ঠিক করে নেওয়া যাক, কা-আ আ-লো-ও-ও-ও’...নাঃ মিলল না তো, ফঁাকের বেলায়ও সোম পড়ছে, সোমের বেলাতেওঁ তাই, ফঁাক মোটেই নেই। ফাক আওয়াজের জন্যে কেন যে এ পাখিটা এত ব্যস্ত তা কুঁকড়ে বুঝলেন না । এক মোরগ মুখে মুখে ግ: