ডোবায় জলে আর তোলে, ল্যাজের পালক র্কাপায়, শেষে এক-পায়ে দাড়িয়ে ভিজে মাথা, নিজের পিঠে ঘষে আর ঠোঁট দিয়ে গা চুলকে চলে। একটা বুড়ে রামছাগল ফল করে রাস্তা থেকে একটা লেখা কাগজ তুলে গিলে ফেলে চটপট, তার পর গম্ভীর ভাবে এদিক ওদিক চেয়ে চলে যায় সেজি ফটক পেরিয়ে রাস্ত বেড়াতে দুপুরবেলা । গোল চক্করের পুত্ব গাঁয়ে একটা আধ-গোল আধ-চোঁকো চক্কর— মরচে ধরা ফুটে ক্যানেস্তার, খড়কুটো, ভাঙা গামলা, পুরোনে তক্তপোশের উই-খাওয়া ফর্ম। আর একরাশ ছেড়া খাতায় ভরতি । সেখানে গোট কয়েক মুরগি চরে —ছাই রঙ, পাটকেল রঙ । শাদা একটা মস্ত মোরগ, তার লাল টুপি মাথায়, পায়ে হলদে মোজ, গায়ের পালক যেন হাতির দাতকে ছুলে কেউ বসিয়েছে, একটির পাশে আর একটি। মোরগট গোল চক্করের ফটকের একটা পিলপে দখল করে বসে থাকে, নড়ে না চড়ে না । বেলা চারটে পর্যন্ত এইভাবে নিঝুমের পাল চলে। ঢং ঢং করে আবার ঘড়ি পড়ে। একটার পর একটা ইস্কুল গাড়ি, আফিস গাড়ি পালকি এসে দলে দলে সোয়ারি নামিয়ে চলে । গোবিন্দ খোড়া রাজেন্দ্র মল্লিবের ওপ:মে রোজই ভাত খায় আর আমাদের গোল চকুরটাতে হাওয়া খেতে আসে । কতকালের পুরোনো আঁকাবাকা গাছের ডালের মতো শক্ত তার চেহারা, ঠিক যেন বাইবেল কি আরব্য উপন্যাসের একটা ছবির থেকে নেমে এসেছে। গোল বাগানের ফটকের একটা পিলপে ছিল তার পিঠের ঠেস । বৈকালে সেখানটাতে কারো বসবার জো ছিল না । বাদশার মতো গোবিন্দ খোড়া তার সিংহাসনে খোড়া পা ছড়িয়ে বসে যেত। পাহারাওয়ালা, কাবুলিওয়াল, জমাদার, সরকার, চাকর, দাসী— সবার সঙ্গেই আলাপ চলে, খাতিরও সকলের কাছে যথেষ্ট তার। শহর-ঘোরা সে যেন একটা চলতি খবরের কাগজ কিংবা কলিকাতা গেজেট । পাচিলের উপর বসে সে খবর বিলোত। শুনেছি প্রথমবার প্রিন্স আসবার সময় পুলিশ থেকে তেল বিলিয়ে গরিবদের ঘরেও দেওয়ালি দেবার ব্যবস্থা করা হয়েছিল । গোবিন্দর ঘর-দুয়োর কিছুই নেই– সে ভোজনং যত্র তজু গুড়ংজ্ঞ