পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (প্রথম ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৪
আখ্যানমঞ্জরী।

ত্যাগ করিয়াছেন, তিনি মৃত হইয়া পতিত আছেন, অর্থাভাবে এ পর্য্যন্ত তাঁহার অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়া হয় নাই। আমাদের পিতা আছেন, তিনিও, অত্যন্ত পীড়িত হইয়া, আমাদের মৃত জননীর পার্শ্বে পড়িয়া আছেন, অর্থাভাবে তাঁহার চিকিৎসা হইতেছে না, যেরূপ অবস্থা, তাহাতে তিনিও ত্বরায় প্রাণ ত্যাগ করিবেন, সন্দেহ নাই। এই বলিতে বলিতে, তাহাদের নয়নযুগল হইতে প্রবল বেগে বাষ্পবারি বিগলিত হইতে লাগিল।

 সেই দীন পরিবারের দুরবস্থার বিবরণ শুনিয়া, ইংলণ্ডেশ্বর শোকার্ত্ত ও দয়ার্দ্র হইলেন, এবং কহিলেন, তোমরা বাটীতে চল, আমি তোমাদের সঙ্গে যাইতেছি। কিয়ৎক্ষণ পরে, তিনি তাহাদের আলয়ে উপস্থিত হইলেন, এবং তাহাদের বর্ণিত বৃত্তান্ত স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করিয়া, অত্যন্ত শোকাকুল হইয়া, অশ্রু বিমোচন করিতে লাগিলেন। তাঁহার সঙ্গে যাহা ছিল, তৎক্ষণাৎ সেই বালকদিগের হস্তে দিলেন, পরে সত্বর স্বীয় প্রাসাদে প্রতিগমন করিয়া রাজমহিষীকে সবিশেষ সমস্ত শ্রবণ করাইলেন এবং অবিলম্বে, সেই বিপদাপন্ন দীন পরিবারের নিমিত্ত, প্রভূত আহার সামগ্রী, শীতবস্ত্র, পরিধেয় বসন প্রভৃতি যাবতীয় আবশ্যক বস্তু পাঠাইলেন, আর তাহাদের পীড়িত পিতার চিকিৎসার নিমিত্ত, এক জন উত্তম ডাক্তার নিযুক্ত করিয়া দিলেন।

 এইরূপ রাজকীয় সাহায্য লাভ করিয়া, সে ব্যক্তি ত্বরায় সুস্থ হইয়া উঠিল। ইংলণ্ডেশ্বর সেই নিরাশ্রয় পরিবারের প্রতি এত সদয় হইয়াছিলেন যে, তাহাদের উপস্থিত বিপদ নিবারণ করিয়াই ক্ষান্ত রহিলেন না, তাহাদের অনায়াসে