পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/১৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জাতিভেদ S84 দেখলেই শক্রর গুলিতে বিদ্ধ হ’তে হবে স্বতরাং শাগুিল্য, বাংসায়ন বা ভরদ্বাজ—এদের মধ্যে কার বংশধর ট্রেঞ্চে খাবার জুগিয়ে দিয়ে গেল তার আবিষ্কার করুবার চেষ্টা করলে সে খাবার কখনও মুখে তুলতে হবে না। আজ এই বিজ্ঞানপ্লাবনের যুগে সকল দেশে সকল সমাজের অবস্থা এরূপ পরিবর্তিত হয়েছে যে পৃথিবীতে বেঁচে থাকতে হ’লে তার সঙ্গে । সামঞ্জস্য স্থাপন ক’রে ব্যবস্থার পরিবর্তনও আমাদের পক্ষে অনিবার্য্য হয়ে পড়েছে। এই সামঞ্জস্তস্থাপনের চেষ্টায় যে যে পুরাতন প্রতিষ্ঠানগুলিকে বাদ দিতে হবে তার মধ্যে জাতিভেদের কঠোর নির্ম্মমতা প্রথম এবং প্রধান ! জাতিভেদের বজ্রকঠোর বন্ধন বাংলা দেশে তবু ত অনেকটা শিথিল হয়েছে। বাংলায় ব্রাহ্মণ, কায়স্থ ও বৈষ্ঠের পরই নবশাখজাতি সমাজে স্থান পেয়েছেন এবং তাদের জল "চল" হয়েছে। সামাজিক অবস্থার পরিবর্তনে, ও শিক্ষাদীক্ষার গুণে অন্য অন্য অনেক জাতি বাংলাদেশে ক্রমে ক্রমে মুখ তুলে দাড়াচ্ছেন এবং এক “অচলায়তনে”র নিতান্ত গোড়া বামুন ছাড়া আর কেউই তাদের ঘৃণা করে দূরে ঠেলে দিচ্ছে না। কিন্তু মান্দ্রাজে জাতিভেদের শাসন এখনও বড় ভয়ানক । সেখানে আয়ার ও আয়েঙ্গারগণ ব্রাহ্মণ, ব্রাহ্মণেতর সকল জাতিই নীচ ও অস্পৃশু। নবশাখ প্রভৃতি যেসব জাতি বাঙালী হিন্দুসমাজে একটা মাঝামাঝি স্থান অধিকার করে আছেন মাঙ্গাজী হিন্দুসমাজে সেরূপ কিছু নেই। মান্দ্রাজে পেরিয়া নামে এক সম্প্রদায় আছে, তাদের অবস্থা বড়ই হীন । তার বংশেরপর রংশ ধরে জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত মাথা হেট করেই থাকে, তাদের ছায়া স্পর্শ করলে ব্রাহ্মণকে প্রায়শ্চিত্ত করতে হয়, এতই তারা • অভিশপ্ত ও অপবিত্র ! স্বর্গগত শিবনাথ শাস্ত্রী মহাশয় তামিল “ দেশ ভ্রমণকালে এক সম্প্রদায় লোক দেখেছিলেন ; তার দূর থেকে চীৎকার করতে করতে আসে—“মহাশয় স’রে যান আমি অধম যাচ্ছি।”