পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/৩৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাঙ্গালায় গো-ধনের অভাব ও বাঙ্গালীর স্বাস্থ্যনাশ ৩৫১ : করিয়া সুবিধামত সেই দুধ ঢালিয়া লয় আশ্চর্য্যের বিষয় এই, যদিও এই দুধ বাহিরে রাখিয়া চলিয়া যায়, তবু কেহ ইহা স্পর্শ করে না । ইহা ছাড়া পাড়ায় পাড়ায় Dairy অর্থাৎ ‘গব্যজাতের-ভাণ্ডার” আছে । ইংরেজের সেখান হইতে ইচ্ছামত ছধ, মাখন, কিনিয়া আনিতে পারে । ইংরেজ জাতি গোখাদক বলিয়া বিখ্যাত। তা ছাড়া, তাহার মেষ, শূকর, শশক ও নানাবিধ পক্ষীর (Partridge) মাংস প্রচুর পরিমাণে খায় । ইহা সত্ত্বে ও ইংরাজদিগের শিশু সস্তান প্রধানতঃ দুগ্ধে পরিপুষ্টি লাভ করে এবং তাহারা নিজেরাও যথেষ্ট পরিমাণে দুগ্ধ পান করে । এখন বুঝা যাক ইহার কেন সবল । পুষ্টিকর খাদ্য ইহার যথেষ্ট পরিমাণে গ্রহণ করে । আমি সম্প্রতি আয়রলণ্ডও ভ্রমণ করিয়াছি । ইহার একটি নাম এমারাল্ড আইল (Emerald Isle) অর্থাৎ সবুজ ঘাস পূর্ণ দ্বীপ । আয়রলণ্ডের কৃষিজাত দ্রব্যই প্রধান ধন , সেখানে কলকারখানা—কেবল মাত্র-বেলফাষ্টে দৃষ্ট হয় । নিজেদের অর্থাৎ আইরিশদের অভাব মোচন হইয়া প্রচুর পরিমাণে মাখন, পণির ও ডিম্ব ইংলণ্ডে রপ্তানী হয় । হায় বাঙ্গল ! তোমার আজ কি দুরদৃষ্ট ! তুমি ভারতের মধ্যে উর্বরা ও স্বজলাস্কফল বলিয়া খ্যাতি লাভ করিয়াছ । চাষ অর্থাৎ কৃষিজাত দ্রব্যই তোমার একমাত্র ধনসম্পত্তি । কিন্তু আজ আমি বাঙ্গলার যেখানেই যাই—বিশেষতঃ এই বর্ষাকালে; টাকায় দুই সের আড়াইসেরের বেশী দুধ মিলে না । তাহাও যথেষ্ট পরিমাণে নয়। এমনকি, একমণ, ছমণ দুধ সংগ্রহ, করিতে হইলে অন্ধকার দেখিতে হয় । 態 競 আমাদের দেশের গরুর অবস্থা দেখিলে ক্রন্দন সম্বরণ করা যায় না । বিশেষতঃ পাটের চাষ বৃদ্ধি হওয়ার পূর্ব্বে যাহা কিছু গোচারণের মাঠ। ছিল, তাহ বাজেয়াপ্ত হইয়া গিয়াছে। এখন গৃহস্থের গো-পালন কর।