পাতা:আত্মচরিত (৩য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/১১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৮৬২-৬৭ ] মজিলপুরে বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা I তাহারা জমিদার বাবুদের আদেশে ঘরামির কাজ হইতে নিবৃত্ত হইয়াছে। তখন ব্রাহ্ম যুবকগণ কোমর বঁাধিয়া নিজেরাই ঘরামির কাজ করিতে প্রবৃত্ত হইলেন। তৎপর দিন সন্ধ্যা পর্য্যন্ত সেই কাজে প্রবৃত্ত রহিলেন। তঁহারা জমি মাপিয়া, খুঁটি প্রভৃতি পুতিয়া রাত্রে ঘরে গেলেন। প্রাতে আসিয়া দেখেন যে তঁহাদের পোতা খুঁট প্রভৃতি নাই, তৎপরিবর্ত্তে জা এক পাশ্বে একখানি ছোট খড়ের ঘর বাধা রহিয়াছে । দেখিয়া আশ্চর্য্যান্বিত হইয়া নিকটবর্ত্তী পাড়ায় কারণ অনুসন্ধান করিয়া জানিলেন যে, শুকর মোল্লা নামক জমিদার বাবুদের এক চাকর রাতারাতি ঐ ঘর বাধিয়া ভোরে ব্রাহ্ম যুবকদের খুঁটিগুলি তুলিয়া কঁধে করিয়া লইয়া গিয়াছে। বালিকা বিদ্যালয়ের পণ্ডিত মহাশয় এবং অপর গ্রাম হইতে শ্বশুরালয়ে-যাওয়া এক যুবক ভোরে উঠিয়া ঐ খুঁটি প্রভৃতি লইয়া যাইতে দেখিয়াছেন।* ইহার পর ব্রাহ্ম যুবকগণ আদালতে শুকর মোল্লার নামে অভিযোগ উপস্থিত করিলেন। সেই মামলা মজিলপুর গ্রামের পাঁচ ছয় ক্রোশ উত্তরবত্তী বারিপুর গ্রামের আদালতে হইল। শুনিতে পাওয়া যায়, জমিদার বাবুরা ঐ মামলার জন্য শুকর মোল্লার নামে স্কুলের জমির এক জাল দলীল প্রস্তুত করাইয়াছিলেন। মামলা উপস্থিত হইলে, তাহারা সে স্থানের সর্ব্বপ্রধান উকীলাদিগকে নিযুক্ত করিয়া মামলা চালাইতে প্রবৃত্ত হইলেন। এদিকে ব্রাহ্ম যুবকগণ কলিকাতার ব্রাহ্ম বন্ধু দিগকে বলিয়া কতিপয় নবীন ব্রাহ্ম উকীল সংগ্রহ করিলেন। তদ্ভিন্ন মামলা দেখিবার কৌতুহলবশতঃ কলিকাতা হইতে অনেক ব্রাহ্ম যুবক বারিপুরে গেলেন। আদালত গৃহে ব্রাহ্ম দর্শকের ভিড়ের কথা শুনিয়া জমিদার বাবুরা না কি বলিয়াছিলেন, “ও মা ! আমরা ভেবেছিলাম গ্রামের ঐ কয়েকটা ছোড়াই বুঝি ব্রাহ্ম ; দেশে এত ব্রাহ্ম আছে তা ত জানতাম না।” যাতা হউক, মামলার শেষে শুকর মোল্লার

  • ১৭৮৫ শকের মাঘ মাসের তত্ত্ববোধিনী পত্রিকার ১৭৩ পৃষ্ঠায় এই বালিকা বিদ্যালয় গৃহ ভূমিসাৎ করিবার সংবাদ মুদ্রিত আছে।--(সম্পাদক )