8 . শিবনাথ শাস্ত্রীর আত্মচারিত [ ৪র্থ পরিy না হইতে সমগ্র বাড়ী ভূমিসাৎ হইল। চারি দিকের প্রাচীর পর্য্যন্ত ধরাশায়ী হইয়া সমভূমি হইয়া গেল। ব্রাহ্মণ বাড়ীতে আশ্রয় গ্রহণ। ব্রাহ্মণ যুবকের বীরত্ব ও মহত্ত্ব।—তখন বাত্যার প্রকোপ দুৰ্দান্ত দৈত্যের বিক্রমের ন্যায় হইয়াছে। গ্রামের প্রায় একখানিও গৃহ দণ্ডায়মান নাই, সমুদয় সমভূমি হইয়াছে। চারি দিকে চাহিতে চাহিতে অদূরে একখানি গৃহ তখনও দণ্ডায়মান দৃষ্ট হইল। স্থির করা গেল যে, সেখানে গিয়া আশ্রয় লওয়া যাউক । গিয়া দেখি সেই গ্রামের স্ত্রীলোক বালক বালিকাতে সে ঘর পরিপূর্ণ। ঘরখানি নূতন ছিল বলিয়া তখনও দণ্ডায়মান আছে। সেই গৃহস্বামী অতি বৃদ্ধ। তাহার যুবক পুত্র বৃদ্ধ পিতা মাতাকে তাড়াতাড়ি খাওয়াইয়া, ঘরের ভিতরে পূরিয়া, বীরের ন্যায় কোমর বাধিয়াছে, এবং সেই ঝড়ে ছুটাছুটি করিয়া চারি দিকের স্ত্রীলোক বালক বালিকা সংগ্রহ করিয়া সেই ঘরে পূরিতেছে। আমরা ঘরের নিকটে পৌছিয়া দেখি স্ত্রীলোকে ঘর পরিপূর্ণ। আমাদের সঙ্গের ভদ্রলোকটি ঠেলিয়া ঘরে ঢুকিয়া পড়িলেন ; আমাদের দুই বন্ধুর কিরূপ সঙ্কোচ বোধ হইতে লাগিল । আমরা দ্বার হইতে ফিরিয়া পাশ্বের দাবাতে গিয়া দাড়াইলাম। তৎক্ষণাৎ সে দাবার চালটি আমাদের মাথার উপরে পড়িয়া গেল। তখন আমরা ভাবিলাম যে, এরূপে ঘর চাপা পড়িয়া মরা অপেক্ষা বাহিরের উঠানে বসিয়া ঝড় খাওয়া ভাল । এই ভাবিয়া বাহিরে যাইতেছি, এমন সময় গৃহের ভিতর হইতে এক বুদ্ধা রমণীর কণ্ঠস্বর শোনা গেল, “বাবা, তোমরা কোথায় যাও ? এত লোকের যদি জায়গা হ’য়ে থাকে, তোমাদের দুজনেরও হবে।” তখন আমরা বাধ্য হইয়া গৃহের ভিতরে প্রবেশ করিলাম। প্রবেশ করিয়া স্ত্রীলোক বালক বালিকার ক্রন্দনের ধ্বনি শুনিয়া মনে হইতে লাগিল, সেখানে না। ঢুকিলেই ভাল ছিল। ক্রমে বেলা অবসান হইল। অপরাহ চারিটার পর ঝড়ের বেগ কিমিয়া আসিতে লাগিল। গ্রামস্থ যাহারা