পাতা:আত্মচরিত (৩য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শিবনাথ শাস্ত্রীর আত্মচারিত [ ২য় পরিঃ তলায় পড়িয়া যায় । কখনও কখনও ঐরূপে আমার কাপড়ে পড়িয়া যাইত। তৃতীয়, টুনটুনি দিয়েল প্রভৃতি ক্ষুদ্র পাখীরা যখন অন্যমনস্ক ভাবে গাছের ডালে বসিয়া থাকিত, তখন ভো করিয়া তাহার পায়ের নিকটস্থ ডালে সজোরে ঢ়িল মারিতাম। হঠাৎ তাহদের পায়ের নিকটস্থ ডালে সজোরে ঢ়িল লাগাতে তাহারা দিশেহারা হইয়া পড়িয়া যাইত ; আমি অমনি তাহাদিগকে ধরিতাম । ঢ়িল ছোড়া।--ঢ়িল ছোড়া বিষয়ে আমার অদ্ভুত বিদ্যা ছিল। পাখীকে বঁাচাইয়া ডালে ঢ়িল মারিতে পারিতাম। বলা বাহুল্য যে অনেক সময় ডালে ঢ়িল না লাগিয়া পাখীর মাথায় লাগিতা এবং পাখীটির প্রাণ যাইত। এইরূপে আমার হস্তে অনেক পাখীর প্রাণ গিয়াছে। বলিতে কি, পুকুরে ব্যাঙটি ভাসিতেছে বা গাছে পাখীটি বসিয়া আছে দেখিলেই আমার ঢ়িল মারিবার প্রবৃত্তি প্রবল হইয়া উঠিত। শুনিলে হয়ত অনেকে হাসিবেন, এই বৃদ্ধ বয়সেও সময় সময় বৃক্ষশাখায় পাখীটি আছে দেখিয়া আমার ঢ়িল মারিতে ইচ্ছা করে, অমনি হাসিয়া সে ইচ্ছা নিবারণ করি। আমার ঢ়িল ছোড়া বিষয়ে দুইটি ঘটনা স্মরণ আছে। এক বার আমার পিতার সহিত কোথায় যাইতেছিলাম। তখন আমার বয়স ১৩১৪ হইবে । পিতা অগ্রেী, আমি পশ্চাতে। আমি পশ্চাৎ হইতে দেখিতে পাইলাম, আমার পিতার সম্মুখস্থিত একটি বৃক্ষের শাখাতে একটি শালিক পাখী অন্যমনস্ক ভাবে বসিয়া আছে । আর সে প্রলোভন অতিক্রম করিতে পারিলাম না । যে পিতাকে যমের মত? ভয় করিতাম তিনি সঙ্গে, সে কথাও মনে থাকিল না। ভো করিয়া আমার চিলটি ছুটিল। পাখীটির কোথায় যে লাগিল তাহা বুঝিতে পারিলাম না, কিন্তু পাখীটি পাকা ফলটির মত’ বাবার সম্মুখে পড়িয়া গেল। বাবা বুঝিতে পারেন নাই যে আমি পশ্চাৎ হইতে ঢ়িল ছুড়িয়াছি, সুতরাং তিনি মনে করিলেন, আর কোনও কারণে পড়িয়াছে। তিনি পাখীটিকে কুড়াইয়া