পাতা:আধাঁরে আলো - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

________________

আশাতীত সঙ্কীর্ণ অন্তঃকরণের পরিচয় দিয়াছেন, তাহা ভববিভূতিবাবু বলিতে পারেন। যাই হউক, এই ‘ হিজাতির প্রাণস্বরূপ ১০ম মণ্ডলের ৯০ সূক্তটি অপৌরুষেয় ঋকবেদেরই অন্তর্গত থাকা সত্ত্বেও পাশ্চাত্য পণ্ডিতগণের পদাঙ্কানুসারী বঙ্গীয় অনুবাদক তাহাকে প্রক্ষিপ্ত বিবেচনা করায় ভচবিভূতি মহাশয় “বড়ই কাতরকণ্ঠে দেশের আশাভবাসস্থল ছাত্রবৃন্দ ব্রাহ্মণতনয়গণকে ডাকাডাকি কবিতেছেন, সেই সূক্তটি সম্বন্ধে কিঞ্চিৎ আলােচনা আবশ্যক। ব্রাহ্মণ ভিন্ন আর কাহাকেও ডাক দেওয়া উচিত নয়। ইতিপূর্বেই এই ১০ম মণ্ডলেবই ৮৫ সূক্ত সম্বন্ধে আলােচনা হইয়া গিয়াছে ; তাহার পুনরুল্লেখ নিষ্প্রয়ােজন। কিন্তু এই প্রখ্যাত ৯০ সূক্তটি কি? ইহা পরমপুরুষের মুখ-হাত-পা দিয়া ব্রাহ্মণ প্রভৃতি। তৈরী হওয়ার কথা। কিন্তু ইহা জটাপাঠ, পদপাঠ শাকল, বস্কল দিয়া যতই যাচাই হইয়া গিয়া থাকুক না কেন, বিশ্বাস কবিতে হইলে অন্ততঃ আরও শ-চাবেক বৎসর পিছাইয়া যাওয়া আবশ্যক। কিন্তু সে যখন সম্ভব নহে, তখন আধুনিক কালে সংসারের চৌদ্দ আনা শিক্ষিত সভ্য লােক যাহা বিশ্বাস করেন সেই অভিব্যক্তির পর্যায়েই মানুষের জন্ম হইয়াছে বলিয়া মানিতে হইবে। তার পর কোটি কোটি বৎসর নানাভাবে তাহার দিন কাটিয়া, শুধু কাল, না হয় পরশু সে সভ্যতার মুখ দেখিছে। এ-পৃথিবীর উপব মানবজন্মেব তুলনায় চাতুবর্ণ ঋগ্বেদে থাকুক আর না-থাকুক, সে কালকের কথা। অতএব হিন্দ জাতিব প্রাণস্বরূপ এই সূক্তটিতে চাতুবর্ণের সৃষ্টি যেভাবে দৃষ্টি করা হইয়াছে, তাহা প্রক্ষিপ্ত না হইলেও খাটি সত্য জিনিস নয়— রূপক। কিন্তু ভয়ানক মিথ্যা, তদপেক্ষা ভয়ানক সত্য মিথ্যায় মিশাইয়া দেওয়া। কারণ, ইহাতে না পারা যায় সহজে মিথ্যাকে বর্জন করা, না যায় নিষ্কলঙ্ক সত্যকে পরিপূর্ণ শ্রদ্ধায় গ্রহণ করা। অতএব, এই রূপকের মধ্য হইতে নীর ত্যজিয়া ক্ষীর শােষণ করা বুদ্ধির কাজ। সেই বুদ্ধির ৬৫ আঁধারে আলো-৫