পাতা:আফগানিস্থান ভ্রমণ.djvu/১১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আফগানিস্থান ভ্রমণ
১০৭

রাজার আদেশ শুনিয়ে দেয়। সর্বসাধারণ যদি সে আদেশ ভাল বোঝে। তবে মেনে নেয়, নতুবা অগ্রাহ করে। রাজার আদেশ সকল সময় চলে না, গ্রামের লোক স্ত্রীপুত্রপরিবার সমেত কবরস্থ হতে রাজী, তবুও অন্যায়কে প্রশ্রয় দিতে রাজী নয়। সেজন্যই আফগান জাত নানাদিকে বাংগালীর পেছনে থেকেও বাংগালীর চেয়ে একদিকে উন্নত-জীবন কাটাচ্ছে। এখানে কথা ওঠে, যদি কোন গ্রামে পাঁচঘর হিন্দু, দশঘর শিয়া এবং পঁচিশ ঘর সুন্নি থাকে, তবে দুটি সংখ্যালঘিষ্ঠ শ্রেণীর লোক সংখ্যাগরিষ্ঠের কথা শুনবে কেন? এখানে একটা মজার দৃশ্য দেখতে পাওয়া যায়। আফগানিস্থানের শাসন-নীতি ভেদনীতির পক্ষপাতী নয়। আফগান জাতও ভেদনীতির সমর্থক নয়। আমার জমি আমি চাষ করছি। আমার বাড়িতে আমি বাস করছি। ঋণের দায়ে আমার কিছুই যাচ্ছে না, আমি ভেদবুদ্ধি প্রণোদিত হয়ে কার সংগে বিবাদে প্রবৃত্ত হব? জমির জন্য আমাদের ঝগড়া হয় তার একমাত্র কারণ হ’ল, বুদ্ধিজীবীরা নানারূপ বদমতলব কার্যে পরিণত করার জন্য আইনের আশ্রয় নেবার পথ বাতলে দেয়। যারা আইনের আশ্রয় নেয়। তারা দরিদ্র এবং কাপুরুষ। আফগানরা কলহ ইত্যাদির মীমাংসা আইনজীবীর হাতে ছেড়ে না দিয়ে নিজেদের হাতেই রেখেছে। দুরভিসন্ধি যেখানে নেই সেখানে মেজরিটি মাইনরিটির কথা মোটেই ওঠে না। বন্দুক কামান, ছোরা তলোয়ার এ সবই হ’ল তাদের আত্মসম্মান বজায় রাখার পয়লা নম্বরের অস্ত্র। সেজন্য আফগানরা মানুষের অধিকার নিয়েই সসম্মানে সুখে আছে। শাসকদেরও ভেদনীতির আশ্রয় নেবার প্রয়োজন হয় না।

 রাষ্ট্র স্ত্রী-জাতির কোন স্বাধীন সত্তা স্বীকার না করলেও আফগানরা মায়ের জাতের যথোপযুক্ত রক্ষণাবেক্ষণে কখনই শৈথিল্য দেখায় না। স্ত্রীলোকের অসন্মানকারীর প্রতি কড়া শাসনের ব্যবস্থা নিজেদের হাতেই রেখেছে, রাজকর্মচারীর ওপর ছেড়ে দেয় নি। ঘরে সাপ ঢুকলে যেমন গ্রামের লোক পরস্পরের