পাতা:আফগানিস্থান ভ্রমণ.djvu/১৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

কান্দাহার

 কান্দাহার, একটি ছোট্ট শহর। কিন্তু এই সহরের গুরুত্ব এবং বিশেষত্ব কাবুল হতে কোন অংশে কম নয়। কান্দাহার বাস্তবিক পক্ষে ইণ্ডিয়ার প্রবেশ পথ। ইরাণ হতে যে সকল উপনিবেশকারী ভারতে প্রবেশ করেছিল তারা কান্দাহার হয়েই এসেছিল বেশি। হিরাত হতে একটি বড় রাস্তা কান্দাহার হয়ে বেলুচিস্থানের চামন পর্যন্ত এসেছে। এই পথ দিয়েই অনেক বিশিষ্ট পরিব্রাজক এবং গজনীর সুলতান বার বার সোমনাথ আক্রমণ করেছিলেন। ভবিষ্যতে সাম্রাজ্যবাদ থাকবে না, ধর্মের প্রতিহিংসা থাকবে না, অতএব আমাদের পক্ষে কান্দাহার পুনরায় দখল করার দরকারও হবে না, নতুবা আমিও ফরাসী পর্যটকদের মতে বলতাম কান্দাহার ভারতের “লাইফ লাইন”। কান্দাহার ভারতের চাই। শুধু তাই বলতাম না, ফরাসী পর্যটকদের ডিঙ্গিয়ে আরও অগ্রসর হতাম এবং বলতাম দক্ষিণ পাশেরও কতকটা চাই, কারণ সেখানকার লোকও পোস্তভাষা বলে এবং তারাও জাতে ইন্দো-এরিয়ান। বুঝতে পেরেছিলাম এশিয়াতে ইউরোপীয়ানরা যে সাম্রাজ্যবাদ চালাচ্ছে সেই সাম্রাজ্যবাদ অতি সত্বর ধ্বংস হবে। চীনের সাম্রাজ্যবাদী মতলব ছিল শুধু চীনা ধনীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ। আমাদের স্বাধীনতা পাবার ইচ্ছা সকলের মনে আলোকায়িত, ইন্দোচীনের অবস্থাও তাই—অতএব এশিয়া আর পরাধীন থাকবে না। এখন বুঝতে পেরেছি বহুপূর্বে আমি যে ধারণা করেছিলাম তাই ফলবতী হয়েছে। আমরা স্বাধীন হয়েছি এর চেয়ে আনন্দের সংবাদ আর কি হতে পারে?

 এখন এসব সাম্রাজ্যবাদী তথ্যের কথা পরিত্যাগ করে কাজের কথা বলা চাই। কান্দাহারে পৌঁছেছিলাম গভীর রাত্রে। আফগান্ মোটর ড্রাইভার জিজ্ঞাসা করেছিল কোনও সরাই অথবা হোটলে আমাকে রেখে যাবে কি? তাকে বলেছিলাম “এসব হতে পারে না, আমার পায়ের অবস্থা ভাল নয়, অতএব