পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/১২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

 এত সুখ আরও জমাট বাঁধতো যখন পূজোর ছুটিতে সে আসতো কাছে। তখন প্রতি সন্ধ্যায় আমুদে সুরসিক বড় মামাকে সভাপতি করে বসতো আমাদের nonsense-clubএর বৈঠক। এই বৈঠকের কড়া নিয়ম ছিল—প্রতি রাত্রের অধিবেশনে প্রত্যেক সভ্যকে একটা অন্ততঃ বেশ মজাদার রসিকতা করতে হবে, তা’ না করতে পারলে সে রাত্রের মত তার নাম কাটা যাবে। এই ক্লাবে আমি ও বড় মামাই ছিলুম সব চেয়ে বড় গোপাল ভাঁড়, রামায়ণ মহাভারতের যুদ্ধে যেমন বর্ষার জলের মত আকাশ ছেয়ে বান পড়তো, আমাদের দু’জনকে তেমনি অবিরাম চালিয়ে যেতে হতো রসিকতার শরবর্ষণের ঝড়। এই নৈশ অধিবেশনে আমার ছিল সব চেয়ে বড় সুখ তার কাছটি ঘেঁসে বসা ও তার সুন্দর রক্তাধর প্রান্তে ও আকর্ণ দুটি চোখে কেবলি হাসি ফোটান। কখন কখনও সদ্য ওঠা চাঁদের আলোর নেশায় বিভোর হয়ে সে র‍্যাপারের তলায় লুকিয়ে হাত খানি দিত আমার কোলের ওপর, চোখে নিবিড় করে চোখ রেখে বুকের মাঝে তুলতো সুখের ঢেউ আর দেহে জাগাত আনন্দের অপূর্ব্ব শিহরণ।

 আর একটা আনন্দের ব্যাপার ছিল সকাল ও সন্ধ্যায় বেড়াতে যাওয়া। তার সঙ্গে গাছে গাছে পাথরের গায়ে মন্দিরের দেয়ালে তারই নামের পাশটিতে ছুরি দিয়ে নিজের নামটি খুদে রাখা, তাকে পাশে নিয়ে পাথরের মাথায় বসে গান শোনা, ছবি তোলা, গল্প করা, নানা ছুতোয় ও অছিলায়

১১৫