পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/১২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

সারাটা জীবন জুড়ে কোন্ এক সাগরসঙ্গমে অবাধে পাশাপাশি বয়ে চলে; সেখানে পাঁকের মানুষ, স্বর্গের দেবতা ও ভাবের কবি একসঙ্গে ঘরকরণা চালায় কেমন করে তা’ তারাই জানে।

 আমার মাস্তুত ভাই হুপোদা’ বা অবিনাশ এত উৎকট ভাবে নিত্য কামচেষ্টা করতো যে তার albumeneria ব্যাধির সূত্রপাত হলো। শয্যাশায়ী হবার আগে পর্য্যন্ত তাকে দেখেছি সেই করাল ব্যাধির গ্রাসেও বীর্য্য নষ্ট করতে। তার অকাল মৃত্যুতে পরিণাম ভয়ে আমার পঙ্কবাহিনী একটু ক্ষীণস্রোতা হলেন বটে কিন্তু ঐ পর্য্যন্ত। অনেক বার দেখেছি প্রেমের চিন্তা ও গাঢ় উচ্চ অনুভূতির বা আনন্দের ফল রাত্রে নিদ্রায় দাঁড়িয়েছে স্বপ্নদোষে; যে দিন ভগবদ্ভক্তিতে চোখে জল এসেছে সেই দিন রাত্রেই কুস্বপ্নে সমস্ত সত্তা মলিন করে তুলেছে। জীব-ধর্ম্মই এই, ঊর্দ্ধস্তরে যা নিষ্কাম নিরপেক্ষ প্রেম প্রাণস্তরে তাই রূপান্তরিত হয় সময়সাপেক্ষ আসঙ্গলিপ্সায় ও দেহে এসে সেই রসই নিছক দৈহিক কামক্ষুধায় পরিণত হয়!

 নীতিবাগীশতার তাড়নায় আমরা যতই কাম থেকে সরে থাকতে চাই ততই সে মানুষকে তেড়ে ধরে। ভয় এক রকম ধ্যান বা এক প্রত্যয়ধারা; যাকে ভয় করি—এড়িয়ে চলি তাকে সর্ব্বদা স্মৃতিতে জাগিয়ে রাখি, আকর্ষণ ও ত্যাগ—কামনা ও ত্যাগেচ্ছা একই বস্তুর দুটো দিক। যে সহজ হতে পারে কাউকে টানে না বা ছাড়ে না সেই জয় করতে পারে এই সব মানবী বৃত্তিকে; সমতাই আত্ম জয়ের পথ। যখন আমি আলিপুর

১২০