পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/১৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

তোমার ছোট আর দাঁত বড় উঁচু।’ তার পরে কিন্তু স্ত্রীকে খুবই ভাল বেসেছিল, তখন কিন্তু সে বেচারী হৃদয়টি তার আমাকে দিয়ে সর্ব্বস্বান্ত হয়ে চুকেছে। স্বামীর সঙ্গে মানিয়ে তাঁকে ভালবেসে শ্রদ্ধাভক্তি করে সংসার ঘর গৃহস্থালী করা ছাড়া তার তখন আর কিই বা করবার শক্তি আছে, স্বামীর প্রণয়িনী হবার সাধ্য তার যে আমিই নিয়েছি হরণ করে। তার প্রকৃতিটি ছিল কোমল, নমনীয়, ভীরু, নিতান্তই মেয়েলী। স্বামীর প্রতি এই ধারণা তাকে কাঁটার মত বিঁধতো, নিজেকে আমার পায়ে ঢেলে দিয়ে ভাল না বেসেও তার উপায় ছিল না আর স্বামীকে গোপন করার লজ্জা ও অপরাধের বোঝা হাসি মুখে বইবারও তার সামর্থ্য ছিল না। এ রকম দোটানার কি যে নিদারুণ আঘাত তা কেবল শশকের মত কারণে অকারণে ভীত দুর্ব্বলচিত্ত নারীই জানে। স্নায়ু তার লক্ষ্যের অগোচরে দোটানার বেদনায় ও টানাপোড়েনের ধাক্কায় ধাক্কায় দিন দিন এলিয়ে পড়তে থাকে। তারপর যখন হঠাৎ সব ফুরিয়ে যায়, বিধাতার চরম আঘাত এসে দয়িতকে ছিনিয়ে নিয়ে সব সাঙ্গ করে দিয়ে যায় তখন এক দিন তার প্রাণ মন স্নায়ু পেশী সব হঠাৎ জবাব দিয়ে বসে, যন্ত্র বিকল হয়।

 আমার ঢাকায় আসার দু এক মাস পরেই বোধ হয় এক দিন হঠাৎ তার ঘন ঘন বমি হতে লাগল, মাথা ঘুরে শরীর কেমন করতে আরম্ভ করলো। সে বাড়ীতে একজন বুড়ী মুসলমানী রাঁধুনী ছিল, সে মিটি মিটি হাসছে দেখে আমি অবাক হয়ে

১৩১