পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/১৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

সঙ্গিনী হয়ে পাশে না বসলে জীবন-বীণা আমার বাজে না, রাঙা পা দুখানির সোণার কাঠি আমার বুকে সে না দিলে বুকের দীঘি ভরে পদ্ম ও কুমুদ ফোটে না। এ আমার কি হ’লো? আর এক জনকে না নিয়ে কি ছাই আমার চলার উপায় নেই? তাই যদি হ’লো তবে যাকে চাই তাকে পাই নে কেন? একি বিড়ম্বনা!

 দাদাদের টাকা আর নেব না, লেখাপড়া যখন ছেড়েছি তখন নিজের উপার্জ্জন নিজে করবো এই গোঁ ধরে আমি দেওঘরেই তিনটে প্রাইভেট টিউশনী নিলুম। মেজদা প্রতিশ্রুতি দিয়ে কথা রাখলেন না, এই অভিমানে আমার এলো স্বাবলম্বী হবার একরোখা গোঁ,—প্রাইভেট টিউশনী করে টাকা জমিয়ে নিজের খরচে আমার দিবাস্বপ্নের কৃষি-কুটীরটি গড়বো একদিন, এই হলো আমার জেদ। সকাল সন্ধ্যা তিন জায়গায় ছেলে পড়িয়ে আমি পেতুম মাত্র ২৮৲ টাকা; খাই খরচের জন্যে দিদিমার হাতে দেবার কথা হ’লো পনর, বাকি টাকা জমা হবে ডাকঘরের সেভিংস্ ব্যাঙ্কে। বোধ হয় একমাস এই মাথার ঘাম পায়ে ফেলে রোজগার চলেছিল। তখনও দিদিমাকে এক পয়সাও দিই নি, সব টাকাটাই ডাক ঘরের পাশ বইএ জমার অঙ্ক মোটা করে শোভা পাচ্ছে। আর আমার আশার পূর্ব্বাচল আলোয় আলোয় রঙীন করে তুলছে। এমন সময় আবার জীবনে আঁধি নিয়ে বিদ্যুৎ হেনে বাজ ডেকে ঝড় উঠলো।

 তার কিছু আগে আমার ভালবাসার সেই মেয়েটি আত্মীয়-

১৪৪