পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/১৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

সেই ইতিহাস এবার বলতে বসছি। মায়ের বাড়ীখানি তিন হাজার আড়াই হাজারে বিক্রি না করেও আর উপায়ান্তর ছিল না, কারণ, মা ঋণ করে একতলা বাড়ীকে দোতলা করেছিলেন, সেই ঋণ এতদিন ধরে গোকুলে কেষ্ট ঠাকুরটির মত চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়ছিল। এমন ঋণ আছে যার আসল তবু হয়তো না খেয়ে দেয়ে কখনও বা পরিশোধ করা যেত যদি সুদেরও পার পাওয়া যেত; সুদের সুদ, তার সুদ এবং সবগুলি অচিরাৎ আসলে পরিণত হয়ে আবার তার সুদ, এবম্প্রকার ছারপোকার বংশকেই মেরে উচ্ছন্ন করতে গৃহস্থ নাকের জলে চোখের জলে এক হয়, কাজেই তার পক্ষে আসলের কাছেও ঘেঁষা দায় হয়ে উঠে। দেশ যদি কখন স্বাধীন হয় তা’ হলে কাবুলী বেণে ও মহাজনরূপ রক্তশোষক জানোয়ারগুলি যাতে সুন্দরবনের নরখাদক বাঘের মত ক্রমে নির্ব্বংশ হয়ে আসে সে চেষ্টা বিধিমতে করতে হবে। ভ্যাম্পায়ারের মত মানুষকে দরিদ্র ও বিপন্ন দেখলেই সে মানুষের করবে রক্ত শোষণ—তার দৈন্যকে করবে নিজের অর্থ-লালসার ব্যবসার পুঁজি, এর চেয়ে ঘৃণ্য ও নিষ্ঠুর ব্যাপার আর কি আছে? বাঘের মত ধরে নখে ছিঁড়ে পাঁচ মিনিটের মধ্যে উদরসাৎ করা এর চেয়ে ঢের কম নির্ম্মম। য়ুরোপে Inquisition এর যুগে যত রকম যন্ত্রণা দেবার যন্ত্র ও উপায় ছিল তার মধ্যে ছিল একটা পাথরের ঘর। অপরাধীকে তার মধ্যে পুরে রাখলেই তারই চোখের ওপর শনৈঃ শনৈঃ সেই দুয়ার জানলা হীন ঘরের চারটি নিরেট দেয়াল সরে সরে ছোট

১৫০