পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/১৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

হয়ে আসতো, তারপর সেই ক্রম অপরিসর জায়গায় আটকা পড়ে একটুখানি বাতাসের অভাবে খাবি খেতে খেতে সে বেচারী কি ভাবে চেপ্টে পিষে যেত সেই নিষ্ঠুর দেয়ালের চাপে তার ভয়াবহত্ব কল্পনায় সামান্য মাত্র অনুভব করা যায়। কুসীদজীবী মহাজন বা সুদখোর কাবুলীর চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়ন্ত ঋণের চাপে পড়ে স্ত্রী-পুত্র নিয়ে মানুষের ঠিক তেমনি অবস্থাই হয়। তার মনের শান্তি যায়, চোখের নিদ্রা যায়, ক্ষুধা তৃষ্ণা যায়, মান সম্ভ্রম যায়, বাস্তুভিটা যায়, শেষে ছেলেপুলের হাত ধরে দেশান্তরী হতে হয় যদি তার আগে শ্রীঘর না অদৃষ্টে জোটে। মানুষের ধারণা বিধাতার জীবজগতে সে-ই সকলের শ্রেষ্ঠ উন্নত সৃষ্টি, কিন্তু একথাও ঠিক যে ক্রূরতায় বুদ্ধিজীবী সে পশুকেও পরাস্ত করেছে। মানুষ হয়তো সত্য সত্যই শ্রেষ্ঠ, খুব উঁচু শিখরের গায়েই পাতালপুরীর মত নীচু খাত ও গহ্বর থাকে।


১৫১