পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/১৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

দক্ষিণ কোণে তার ছোট্ট মনোহারীর দোকানটি ছিল, তার দোকানে গিয়ে আমি প্রায়ই গল্পগাছা করতুম। ও মেসে সেই ছিল আমার একমাত্র বন্ধু। তার পরামর্শ আমি জিজ্ঞেস করলুম, কি করা যায়, টাকাতো মাত্র নয়টি শ, এ দিয়ে কৃষি হয় না অথচ একটা কিছু তো করতেই হবে, কারণ পেটের দায় বড় দায়। তার নাম বোধ হয় ছিল সুধীর বা অমনি একটা কি, দোহারা ছিপছিপে কর্ম্মঠ মানুষটি, অবিবাহিত, একেবারে স্বাবলম্বী, হাসি তার মুখে লেগেই থাকতো। আমার জীবন নাটমঞ্চের একদিক দিয়ে ঢুকে সে আর একদিক দিয়ে বেরিয়ে কোথায় যে হারিয়ে গেছে তা আজ আর বলতে পারিনে। সে আমাকে প্ররোচনা দিতে লাগল, “বারীনদা, তুমি দোকান কর।”

 আমি। কোথায়?

 সু। পাটনায় তো পড়েছ, সেইখানে করগে; কলকেতায় অত অল্প টাকায় ব্যবসা খাড়া করতে পারবে না।

 তাই ঠিক হলো, মা যাবেন সঙ্গে, কিন্তু আগে আমি গিয়ে দোকান সাজিয়ে বসবো। সুধীর উঠে পড়ে লেগে মুরগীহাটা ও রাধাবাজার ঘুরে সস্তায় পাইকারী দরে আমার মাল কিনে প্যাক করিয়ে দিল,—সাবান, চিরুণী, কাগজ-পেন্সিল, সেণ্টপাউডার, বল, মারবেল, রঙীন সূতো, পুঁতির মালা,—মানুষের মন ভোলাবার কত রকম সরঞ্জামই না আমার সঙ্গে চললো বাঙলার নীল আকাশ ও শ্যাম ধরণী ছেড়ে এক্কার দেশে ধূলোর

১৫৩