পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/১৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

চল্লিশেক হয়েছে আর ফেটেছে। এখনও দেখুন এইখানে একটা মুখ নিয়ে উঠছে, আর এই পাছার দুটো এখনও সারেনি।

 মনমরা ভদ্রলোক আজ আর ডিম খেলেন না, এক কাপ চা আর গোটা দুই টোষ্ট হাতে নিয়ে সনিশ্বাসে করুণ নেত্রে ডিম্বভোজী সহ-পায়ীদের দিকে চেয়ে রইলেন। আর একজন লম্বা কসমের দোহারা কালো ছেলে আসতো, সে কলেজে পড়ে, ধনীর দুলাল, একটু আদর্শের ভাবুক। আমার চোখা চোখা বুলির মোহে নলেন গুড়ে মাছির মত তার ডানা ও পা জড়িয়ে গেল, সে হলো আমার দোকানের সবচেয়ে মঙ্গলাকাঙ্খী বন্ধু। এত দিন পরে এখন আর তার নাম বা মুখাকৃতি মনে নেই, তবে তার উদার বন্ধুবৎসল প্রাণের স্পর্শটুকু ভোলবার নয়; যদি আজও সে বেঁচে থাকে তা’ হলে এই আত্মকাহিনী পড়ে হয়তো সাড়া দেবে। নয়তো টাকার বা মান-যশের গভীর ফেরে এমন অসাড় সে হয়ে গেছে যে, যৌবনের সে দিনগুলির মূল্য আর তার কাছে শতখানি নেই, একদিনের মুগ্ধ চোখের মণি মুক্তা আজ ছেলে খেলার ঝিনুকে ও ঝাঁঝরে পরিণত হয়েছে। তা’ যদি হয়েই থাকে তো তাকে দোষ দিতে পারা যায় না, কারণ—এই তো আমাদের জীবনে অহরহই হচ্ছে, আজ যারা পালা সাঙ্গ করে আসর ছেড়ে যাচ্ছে কাল তাদের সে ত্যক্ত ভাঙ্গা আসর আর এক সুরে অভিনয়ে আর এক দলের কথকতায় জমে উঠছে, দেবলোকের অতিথিরা নাগলোকের মানুষের সঙ্গে মিশ খায় না

১৫৬