পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/১৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

বলেই একদল বেরিয়ে গেলে পরে আর একালের আলো গানের সমারোহ হচ্ছে।

 একদিন দুপুর বেলা দোকানে বসে আছি তীর্থের কাকের মত খরিদ্দারের আশায়, এমন সময় আমার লুব্ধ চোখ মুগ্ধ করে উদয় হলেন ঘোড়ার গাড়িতে এক হিন্দুস্থানী সাহেব। তাঁর সাহেবী পোষাক, চাঁচা ছোলা কেতাদুরস্ত ভাবে কামানো মুখ, হাতে রিষ্টওয়াচ, মুখে বিশুদ্ধ উচ্চারণের ইংরাজি বুলি। সাহেব এলেন, এটা ওটা দেখে কিনলেন অনেক কিছু জিনিস, যাবার সময় ঠিকানা দিয়ে বলে গেলেন টাকা নিয়ে আসতে! আমি তো কৃতকৃতার্থ, আনন্দে আত্মহারা, এত বড় দরাজ হাতের সৌখীন খদ্দের এ দগ্ধ অদৃষ্টে টিঁকলে হয়। তার পর সাহেব প্রায়ই আসতেন, জিনিসও নিতেন বিস্তর এবং ঐ পর্য্যন্ত। রূপচাঁদ ওরফে টাকা বস্তুটি তাঁর ছিল না। এমন বিশুদ্ধ idiomatic ও সাহেবী ইংরাজি কিন্তু লিখতে ও বলতে আমি ছাতুর দেশে কম শুনেছি।

 যে দিন প্রথম টাকা আনতে গেলুম, দেখলুম সাহেব একটা তোয়ালে পরে খালি গায়ে আছেন, আমাকে সমাদর করে বসালেন। টাকা দিলেন দশটি এবং সুদূর ভবিষ্যতের দিকে আশার সঙ্কেতে প্রতীক্ষা করতে বললেন বাকি ৩০।৪০ টাকার জন্যে। টাকা মারা যাবে না তবে কিনা ইয়ে—ইত্যাদি। আমি তখনও আশার লোভে আপ্যায়নে গদ্গদ, তখনও ঠিক ধরতে পারি নি কি কুক্ষণে কত বড় শনি সেদিন দুপুরবেলা আমার

১৫৭