পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/১৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

দোকানে উদয় হয়েছিল। পরে জানলুম ধীরে ধীরে সাহেব আকণ্ঠ নিমজ্জিত, আর কোথায়ও ধারে জিনিস পাবার উপায় না থাকায় হঠাৎ নতুন দোকান দেখে সাহেব বিশেষ ভাবে আমাকেই কৃপা করতে এসেছিলেন। তাঁর পেশা লোকের দরখাস্ত, আপিল ইত্যাদি লেখা এবং আয়ের অধিক মদে দিবারাত্র চূর হয়ে থাকা। আমার দোকান ডুবলো যে কয়টি কারণে এই ধারবাজ সাহেবটি তার অন্যতম।

 বাঁকিপুরে বাঙালীর আরও বড় বড় মনোহারী দোকান ছিল, কারু মুলধন দশ হাজার, কারু বা পনর বিশ হাজার; তার মাঝে ছয় সাত শ’ টাকার ঐ এতটুকু দোকান কিছুদিন যে আসর জমকে ছিল এই-ই আশ্চর্য্য। ইতিমধ্যে আমি সেই দু’খানি ঘরের ভিতর দিককার বাড়ীখানাও নিয়েছি, রাঙা মাকেও কাছে এনেছি, একটা চাকর রেখেছি, আর চায়ের দোকান ফুলে ফেঁপে চপ, কাটলেটের দোকানে পরিণত হয়েছে। ভিতর বাড়ীতে মা রাঁধতেন মাংসের কারি, চপ ও কাটলেট, আর আমি তা’ চায়ের মজলিসে বেচতুম মাখন, রুটি ও ডিমের সঙ্গে সঙ্গে। চাকরটা বাসন ধুতো, ফাই ফরমাজ খাটতো আর চায়ের টেবিলে বয়ের কাজে যোগান দিতো। প্রদীপটি নিভবার আগে যেমন শেষ তেলটুকু নিঙড়ে চুষে নিয়ে দীপ্ত শিখায় চারদিক আলো করে ওঠে, বি ঘোষের ষ্টল্ তেমনি বাঁকিপুরের কলেজের সিং দরজা আলো করে জমকে উঠলো আশু ও অনিবার্য্য মৃত্যু মরবার আয়োজনে। চিরদিন আশার

১৫৮