পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/১৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

আশায় রঙীন প্রাণ আমার তখনও স্বীকার করেনি যে ব্যবসাটি আমার অচিরেই শিঙে ফুঁকবে, কিন্তু সব ব্যবস্থা ও আয়োজন তার আমিই নিজের হাতে তখন করে এনেছি।

 উঠতি ব্যবসা—যার মূলধন এক রকম নেই বললেই হয় তার ঘাড়ে একটি গোটা সংসার চাপানো তাকে বধ করবার ব্যবস্থা ছাড়া আর কি? একটা বড় বাড়ীর ভাড়া, চাকরের মাইনে, মায়ের ও আমার খরচ পত্র যোগাতে গিয়ে ছোট্ট মনোহারী দোকানের লাভের কড়ি তো নিত্য নিঃশেষ হতে লাগলই, মূলধনেও অল্প বিস্তর টান পড়তে লাগলো। চপ কাটলেট কারি কোপ্তার দোকান তখন আনকোরা নতুন, তার ওপর সেটা হচ্ছে ছাতুর দেশ, বাঙালী ছেলে অনেক থাকলেও সৌখীন ইয়ারবাজ কসমের ছেলে খুব বেশী যে ছিল তা’ নয়। সুতরাং লাভ প্রয়োজনের অনুযায়ী তো হ’লই না উপরন্তু রিজার্ভ ফণ্ড তিন শ’ টাকা হোটেল কর্ত্তেই গলে গেল। ক্রমশঃ আমার মত হিসাব জ্ঞানহীন আনাড়ির চোখেও অদূর ভবিষ্যৎটা অন্ততঃ আমার মনি ব্যাগের চোপসানো পেটটা দেখেই স্পষ্ট হয়ে ফুটে উঠতে লাগল। পয়সার অভাবে কলকেতা থেকে মাল আর আনাতে পারা গেল না, পাটনার পাইকেরেরই শরণাপন্ন হতে হ’লো। তাতেও লাভের পরিমাণ এলো বিলক্ষণ কমে; ক্রমশঃ এমন হলো যে, জিনিস-পত্র ফুরোতে লাগলো এবং তা’ পূরণ করতে না পারায় খরিদ্দারও ফিরতে লাগলো বিস্তর। এই ভাবে গালে হাত দিয়ে একমাস কাটাবার পর একদিন

১৫৯