পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/১৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

আমার এমন মুখরোচক করে রাঁধা মাংস মোটেই মুখে দিত না।

 বরোদা থেকে অজয় নদী বোধ হয় ১৫।১৬ মাইল দূর, যাওয়া আসায় এই ত্রিশ মাইল হাঁটা ও খালে বিলে বনে বাদাড়ে পাখী মারার পর সে যে কি সুখনিথর শ্রান্তি ক্লান্তি নিয়ে বাড়ী ফেরা যেত, পা যখন আর উঠতে চাইছে না, এলিয়ে পড়া শরীর কেবল খুঁজছে একটা নরম বিছানা আর দু’চোখ ভরে ঘুম। তখনকার শিকারের সে পাগল টান এখন আর কল্পনায়ও ভাবা যায় না।

 একদিন পাখী মারতে মারতে একদল বুনো শুয়োরের পালের সামনে পড়ে গেছলুম। কি আর করা যাবে, হাতে রাইফেল নেই, ছর্‌রা দিয়ে তো আর নারায়ণের সে বিরাট রূপকে পেড়ে-ফেলা চলে না। একদিন একদল ময়ূরীর পিছনে পিছনে ঝোপে ঝাপে লুকোচুরি খেলেও এক ঘণ্টার মধ্যে একটাকেও মারতে পারি নি। অজয় নদীর মাঝে চরে চরে সন্ধ্যার পর নানা রকম ছোট বড় মাঝারি এবং অতিকায় পাখীর এক একটা প্রায় দশ বার হাজারী ঝাঁক নামতো। তাদের কলরবে কান পাতা শক্ত হ’তো, পরস্পরের কথাবার্ত্তা অবধি শোনা যেত না। সে সময়ে চড়ার কাছে শিয়াল বা কোন বন্য পশু গেলে নাকি ঐ পাখীর দল তাকে ঠুকরে ঠুকরে সাবাড় করতো। কোন নৌকাওয়ালা মাঝিকে আমি সন্ধ্যার পর চরের কাছে যেতে রাজী করাতে পারি নি। এক একটা পাখী আকারে এত বড় যে, দেখতে উট পাথীর মত, এত ভারি যে, তারা উড়তে হলে বিশ পঁচিশ

১৭১