পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/১৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

 বরোদায় আমি বোধ হয় তিনবার গিয়েছিলুম। প্রথমবার যখন যাই তখন সেখানে দিদি ও সেজবৌদি ছিলেন না বলেই মনে হয়। তখন এবং আবার যখন দিদি বৌদি’ ও সেজ মামীকে নিয়ে দেওঘর থেকে পুজার ছুটীর পর বরোদায় (সেজদা’র সঙ্গে) আমি ফিরি তখনও আমাদের অবসর বিনোদন হতো প্লাঞ্চেট নিয়ে। প্লাঞ্চেট হচ্ছে দু’টো বোতামের মত পায়ার ওপর তে-কোণা কিম্বা পানের আকৃতির একটা কাঠ, তার এক দিকের ছিদ্রে একটা পেন্সিল লাগানো থাকে। কাঠটার ওপর দু’জনে হাত রাখলে ওটা ক্রমশঃ চলে এবং পেন্সিল দিয়ে লিখতে থাকে। যে শক্তি এসে হাতে ও প্লাঞ্চেটে ভর করে লেখে সে কখন বলে “আমি রামমোহন রায়,” কখন বলে “আমি নিত্যানন্দ সরকারের পিসী, দত্তদের শালখের বাড়ীর বেলগাছে আছি” ইত্যাদি। টেবিল বা প্লাঞ্চেটে হাত রাখলে হাত যে আপনি চলে তা’ কোন কোন ক্ষেত্রে সত্যি, কিন্তু সে শক্তি যে কি—আমাদেরই অবচেতনার খেলা বা কোন পারলৌকিক জীবাত্মা বা ভূতের কারসাজি তা বলা শক্ত। আমি এই সময় স্পিরিচুয়ালিষ্টদের বেদ মায়ার্সের প্রচণ্ড বই দু’খান। Human Personality পড়ে ফেলেছিলুম, সার কোনান ডয়েল ইত্যদির কথাও ঢের দেখেছি, কিন্তু কাউকে ঠিক ঠিক প্রমাণ করতে দেখি নি যে এই সব খেলা সত্যিই পারলৌকিক জীবের খেলা। প্লাঞ্চেটে কিছু একটা শক্তি এসে মৃক্ত কোন আত্মীয়ের নামে হুবহু পূর্ব্ব ঘটনা বলছে, এতে প্রমাণ হয় না যে ভূতে বা প্রেতাত্মায়

১৭৪