পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/১৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

যতদিন নারী-সঙ্গসুখ অদৃষ্টে ঘটেনি ততদিন দিল্লীকা লাড্ডুর পশ্চাতে ছোটার এই অবস্থাটি যে কি পর্য্যন্ত প্রাণান্তকর ছিল তা’ ভুক্তভোগী মাত্রেই জানেন; একে তো পর্দ্দা ও ঘোমটায় ঢেকে নারীকে করে রাখা হয়েছে দুর্ব্বার মোহের বস্তু, তার ওপর ঐ বয়সটিতেই প্রথম বসন্ত স্পর্শে রসাপ্লুত নব-মুঞ্জরিত প্রাণ আমাদের হয়ে ওঠে একান্তই লোভী ও ক্ষুধাতুর। তখন যে দু’চারটি মেয়ে দৈবাৎ চোখে পড়েন তাঁদের রূপ দূর থেকে গোগ্রাসে গেলা ছাড়া আমাদের দেশের যুবকদের উপায়ান্তর থাকে না, তাদের দেখেও যতখানি বিড়ম্বনা না-দেখেও ততখানি।

 যে সব দেশে নারী ও পুরুষের সম্বন্ধটা যৌনভয়ে এমন আড়ষ্ট নয়, ছেলেবেলা থেকে যে দেশের ছেলে মেয়ে সহজভাবে মেলামেশা করতে পায়, সে সব দেশে গা-সওয়া হয়ে নারী তার মোহিনীরূপ ত্যাগ করে কতকটা কেন অনেকটাই সহজ হয়ে দাঁড়ায়, পুরুষের চোখে সেও হয় শেষে গুণে নিতান্তই সাধারণ মানুষ, রহস্যে ঘেরা আমাদের দুষ্প্রাপ্য চাঁদা মামা নয়। কৈশোরে ও প্রথম যৌবনে ছেলে মানুষী ভাবে দু’চার বার প্রেমে পড়ে হৃদয় হারিয়ে ঘা খেয়ে খেয়ে সে সব দেশের পুরুষ যখন উঠে দাঁড়ায় তখন তার মোহের ঘোর অনেকটা কেটে গেছে, সে একটা সহজ ছন্দ ও balance পেয়ে সতর্ক হয়েছে, হৃদয়াবেগ ধারণ ও সংযত করবার কৌশল আয়ত্ত করেছে। আমার জীবন দিয়ে বাঙালীর ছেলের নারী-বঞ্চিত জীবনের হাহাকারটার ইতিহাস এবং সুফল ও কুফল বেশ পাঠ করার

১৭৯