পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/১৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

সুযোগ ঘটে। কারণ, নানা ঘটনা চক্রে পড়ে নারীর সঙ্গে চরম সম্বন্ধটি আমার সারা যৌবনটা পেরিয়ে ৪৬।৪৭ বৎসর বয়স অবধি ঘটে নি। অথচ আমার দেহে মনে প্রাণে তার প্রয়োজন, তার লিপ্সা ও ক্ষুধা, তার ডাক এত প্রবল ছিল যে, সে তীব্রতা আমাকে কবি করে ছেড়েছিল। রসায়ন শাস্ত্রে সোণা তৈরী করতে হ’লে, মকরধ্বজ তৈরী করতে হ’লে নানা ধাতু ও উপাদান মিশ্রিত রসকে যেমন বহুক্ষণ ধরে—কতই না দিবাযামিনী আগুনে পাক করতে হয় মানুষের হৃদয় মন প্রাণের রসবস্তুকেও তেমনি অনির্ব্বাণ রাবণের চিতার মত আগুনে ফেলে দীর্ঘকাল পাক না করলে তা থেকে কবিত্ব ও প্রতিভার অমন সোণালী বস্তুটি লাভ হয় না। এক এই কারণ ছাড়া আমাকে এতদিন ধরে নারী সংসর্গ থেকে উপবাসী রাখার আর কোন সার্থকতা আমি দেখি নে।

 আমার স্বভাবে নারীকে দুর্ব্বার টানের বস্তু করবার কত যে উপাদান ও কারণ আমার জীবনে বর্ত্তমান তা’ একবার ভেবে দেখুন। প্রথম জন্মাধিকার সূত্রে প্রবল কামশক্তি আমি পেয়েছিলুম। দ্বিতীয়, আমার কবিত্ব শক্তি যা মানুষের চোখে সুন্দরকে নানাভাবে দেখায় তার রহস্যময় আবরণটি পরদায় পরদায় তুলে, তার অবগুণ্ঠন সরিয়ে সরিয়ে। রূপ, সুষমা ও আনন্দের কুবের ভাণ্ডার এই জগতে থরে বিথরে কত যে অপর্য্যাপ্ত সাজানো রয়েছে তা’ সহজ সংসারী মানুষ সাদা চোখে সব দেখতে পায় না, সে সব নিঃশেষে দেখতে পায়— কেবল

১৮০