পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/১৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

চিত্তরঞ্জনকে ভোগবিলাসী করে রেখেছিল সেই শক্তিই মুহূর্ত্তের আবেগে ঊর্দ্ধমুখী হয়ে তাঁকে করে তুললো সর্ব্বত্যাগী দেশবন্ধু। যেখানে সব চেয়ে উঁচু আকাশস্পর্শী গিরিচূড়া নিজ মহিমায় দাঁড়িয়ে আছে তারই পাশে থাকে পাতাল-ছোঁয়া অতলগর্ভ খাদ। তাই শাস্ত্রে বলে ‘তেজিয়াংশ্চ ন দোষায়’। তাই মানব জীবনের ইতিহাসের পাতায় এত বড় বড় কবি, দেশকর্ম্মী, বীর ও চিত্রকরদের পাই এতখানি উচ্ছৃঙ্খলতার প্রতিমূর্ত্তি রূপে। তাঁরা উদ্বেল তরঙ্গমুখর প্রাণসিন্ধু বুকে ধরে তার রেগ সব সময় সামলাতে পারবেন না সেটা কি খুব বেশী আশ্চর্য্য ব্যাপার? ক্ষুদ্রপ্রাণ ক্ষুদ্রশক্তি মানুষের পক্ষে শাস্ত্রভয়ে লোকভয়ে বিধি-নিষেধের ভয়ে গোপাল সুবোধ বালক সেজে চলা সহজ, কারণ—তাদের পিছনে খুব বড় শক্তির তাড়া নেই, ভাল বা মন্দের ক্ষুধা তাদের একটুখানি।

 যাই হোক, এই প্ল্যাঞ্চেটী ব্যাপারে ক্রমশঃ আমাদের জীবনের নদীপথে তরীখানি বাঁক নিয়ে আবার অন্য পথে চলবার আয়োজন করে নিলো। রামমোহন কি বিবেকানন্দ বা অমনি কে এসে ক্রমাগত বক্তৃতা দিয়ে আমাদের উত্তেজিত করতে লাগল দেশে নব আনন্দমঠে সন্তান-সেনা গড়বার জন্যে। তখন মহারাষ্ট্রের গুপ্তসমিতির নেতা ঠাকুর সাহেব জাপানে, গুজরাটের গুপ্তচক্রের দেশপতি (প্রেসিডেণ্ট) বরোদায়ই আছেন। তাঁর কাছে আদেশ পেয়ে বরোদা সেনা-বিভাগের কাজ ছেড়ে দিয়ে যতীন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় কলকেতায় চলে গেছেন এবং সেখানে

১৮২