পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

তোমরা সবাই মা বলে ভাই,
ভুলিয়ে রেখো মা যশোদায়।”

ঠাকুর মা তখন উঠতে পারেন না, চোখের দৃষ্টি ও তাঁর গেছে, বড় পিসী তাঁর সেবা করেন। বাবার মুখে মাথায় হাত বুলিয়ে কোলের কাছে টেনে নিয়ে ঠাকুরমা তাঁকে কোলের শিশুর মত আদর করতেন, আমায় চোখে দেখতে পেতেন না বলে তাঁর কি দুঃখ! জব্বলপুরের মার্ব্বল পাহাড় ও জলপ্রপাত আমার এখনও মনে আছে, এলাহাবাদে একটা কি মেলায় বাজী পুড়ছিল, আতস বাজী দিয়ে রাম লক্ষণ হনুমান রাবণ সব করা হয়েছিল। একটা বিপুল মাঠে অনন্ত জনসমুদ্র আমার আজও মনে বিস্মৃতির মাঝে ডুবে যায়নি। আর মনে আছে ইংরাজি হোটেলে এক এক প্লেট ভরে কাটলেট খাওয়া। সেই হোটেলে সাহেবী কেতায় আমরা আশ্রয় নিয়েছিলুম। বাবা চলে যেতেন কাজে কর্ম্মে আমাকে চাকরদের কাছে রেখে—যা’ চাই তাই দেবার হুকুম জারি ক’রে। আমি আর চাকরটি পরামর্শ করে এক একবারে এক এক ডজন কাটলেট অর্ডার দিতুম, বলাই বাহুল্য তার অনেকগুলো যেতো লোভী চাকরটির উদর নামক গহ্বরে।

 বাবার মৃত্যুর পর কাকা একদিন কি দুদিন এসেছিলেন, তারপর আমাদের আশ্বাস ও সান্ত্বনা দিয়ে তিনি ভাগলপুর চলে যান। শ্রীকৃষ্ণকুমার মিত্র প্রায়ই আসতেন, একদিন তাঁর বড় মেয়ে কুমারী রত্ন বা কুমুদিনীকে এনেছিলেন। আমাদের মাসতুত বোনেদের মধ্যে সেই ছিল সব চেয়ে সুন্দরী। সেই

৭৩