পাতা:আমার কথা (প্রথম খণ্ড) - বিনোদিনী দাসী.pdf/৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

অধীনার নিবেদন।

 আমার শিক্ষাগুরু ৺গিরিশচন্দ্র ঘোষ মহাশয়ের অনুরােধে এই আত্মকাহিনী লিখিয়া যখন তাহাকে দেখিতে দিই; তিনি দেখিয়া শুনিয়া যেখানে যেরূপ ভাবভঙ্গীতে গড়িতে হইবে উপদেশ দিয়া বলেন যে, তােমার সরলভাবে লিখিত সাদা ভাষায় যে সৌন্দর্য্য আছে, কাটাকুটি করিয়া পরিবর্তন করিলে তাহা নষ্ট হইবে। তুমি যেমন লিখিয়াছ, তেমনি ছাপাইয়া দাও। আমি তােমার পুস্তকের একটি ভূমিকা লিখিয়া দিব। একটি ভূমিকা লিখিয়াও দিয়াছিলেন; কিন্তু তাহা আমার মনের মতন হয় নাই। লেখা অবশ্য খুব ভালই হইয়াছিল; আমার মনের মতন না হইবার কারণ, তাহাতে অনেক সত্য ঘটনার উল্লেখ ছিল না। আমি সেকথা বলাতে তিনি বলিয়াছিলেন যে,—সত্য যদি অপ্রিয় ও কটু হয়, তাহা সকল সময়ে প্রকাশ করা উচিত নয়। সংসারে আমাদের ন্যায় রমণীগণের মান অভিমান করিবার স্থল অতি বিরল। এইজন্য যাঁহারা স্বভাবের উদারতা গুণে আমাদিগকে স্নেহের প্রশ্রয় দেন, তাহাদের উপর আমরাও বিস্তর অত্যাচার করিয়া থাকি। একে রমণী অদূরদর্শিনী, তাহাতে সে সময় অভিমানে আমার হৃদয় পূর্ণ; গিরিশ বাবু মহাশয়ের রুগ্ন-শয্যা ভুলিয়া, তাঁহার রােগ-যন্ত্রণা ভুলিয়া, সত্য ঘটনা সকল উল্লেখ করিয়া আর একটি ভূমিকা লিখিয়া দিবার জন্য আমি তাহাকে ধরিয়া বসিলাম। তিনিও তাহা লিখিয়া দিতে স্বীকার করিয়া