পাতা:আমার বাল্যকথা - সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৬
আ মা র বা ল্য ক থা

হইয়াছি কিন্তু সম্পূর্ণরূপে হইতে পারি নাই। আরো তিন সপ্তাহকাল সময় না পাইলে এই সমস্ত গোলযোগ নিষ্পত্তি করিয়া আমার কর্মে ফিরিয়া যাওয়া আমার পক্ষে একপ্রকার অসম্ভব। আপনি আমার পুনঃ পুনঃ ছুটির আবেদন গ্রাহ্য করিয়া আমাকে অনুগৃহীত করিয়াছেন, গবর্ণমেণ্টও যথেষ্ট অনুগ্রহ করিয়াছেন; পুনরায় ছুটির দরখাস্তে (একদিনের জন্যও) আপনাদিগকে বিরক্ত করা আমি নিতান্ত অন্যায় বিবেচনা করি, অতএব একান্ত বাধ্য হইয়া গবর্ণমেণ্টের নিকট আমার এই চাকরীর ইস্তফা পত্র প্রেরণ করিতেছি। যখন প্রথমে আমি গবর্ণমেণ্টের এই চাকরী স্বীকার করি, তখন তাহার বেতনের প্রতি আমার দৃষ্টি ছিল না কিন্তু এইক্ষণে আমার যেরূপ বৈষয়িক অবস্থা এখন তাহাতে আমার ঔদাসীন্য করা ঠিক হয় না। আমার এই যে দুরবস্থা ঘটিয়াছে তাহা আমার নিজের দোষে নয় কিন্তু আমার স্বর্গগত ভ্রাতার ঋণভার আমার উপরে পড়িবার দরুণ আমি একান্ত বিব্রত হইয়া পড়িয়াছি। এক্ষণে প্রার্থনা এই যে গবর্ণমেণ্ট আমার প্রকৃত অবস্থা অবগত হইয়া যাহাতে ভবিষ্যতে আমাকে ক্ষতিগ্রস্ত হইতে না হয় সেই বিষয়ে কৃপাদৃষ্টি করেন।”

 Young সাহেব এই পত্রের উত্তরে লেখেন—“তুমি লিখিতেছ যে তিন সপ্তাহ সময় পাইলে তুমি তোমার পাওনাদারদের সঙ্গে বোঝাপড়া করিয়া এই দায় হইতে মুক্ত হইতে পার। তা যদি হয় তাহা হইলে আমার পরামর্শ এই যে একেবারে ইস্তফা না দিয়া তুমি আর এক মাসের অবকাশ প্রার্থনা করিয়া গবর্ণমেণ্টে দরখাস্ত কর, উত্তর পাইলে যথাকর্তব্য স্থির করিবে। আপাতত আমি তোমার এই ইস্তফা-পত্র গবর্ণমেণ্টে না পাঠাইয়া আগামীকল্য পর্যন্ত তোমাকে মনঃস্থির করিবার সময় দিতেছি।”

 কলেক্টর সাহেবের পরামর্শ অনুসারে ছোটকাকা কার্য করিয়াছিলেন বলিয়া বোধ হয় না। ইহার কয়েক মাস পরেই