পাতা:আর্য্যাবর্ত্ত (প্রথম বর্ষ).pdf/৩৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

করিতে লাগিলেন । তাহার ব্যবহারে, বাক্যে, বিলাসে-তােহার পূর্বের অবস্থার ; পরিচয়মাত্র পাইবার উপায় ছিল না । v) যেমন কোন কোন সংক্রামক রোগের শক্তি কতকগুলি লোককে আক্রমণ করিয়াই ব্যয়িত হইয়া যায় বা ব্যক্তিবিশেষের দেহে কার্য্যকারী হয় না-রাজেশ্বরের . উদ্ধত গর্ব্ব তেমনই কাত্যায়নীতে সংক্রমিত হইয়াই নিঃশেষ হইয়াছিল-কমলেশের সরল, উদার, প্রফুল্ল হৃদয়ে তাহা আপনার দুষ্ট প্রভাব বিস্তৃত করিতে পারে নাই। কমলেশ গ্রামের ভদ্রলোকদিগের সহিত মিশিত,-যুবকদিগের সহিত ধনুর্ব্বাণব্যবহারের প্রতিযোগিতায় প্রবৃত্ত হইত—অনেকের গৃহেই যাইত। এরূপ ব্যবহার যে তাহার পক্ষে সন্ত্রমনাশক রাজেশ্বর তাহ! তাহাকে বুঝাইয়া উঠিতে পারিতেন না । তাহার পর যখন একদিন সে শ্যামাচরণের গৃহে গমন করিল, তখন রাজেশ্বরের ধৈর্য্যাচু্যতির উপক্রম হইল। তিনি পুত্রকে ডাকিয়া তাহার এ কার্য্যের নিন্দ করিলেন ; সঙ্গে সঙ্গে তাহার দেশত্যাগের কারণ জানাইয়া বলিলেন, “প্রতিশোধ লইব, প্রতিজ্ঞা করিয়াছিলাম। সে প্রতিজ্ঞাপালন করিয়াছি, কিন্তু আমার বড় দুঃখ, রামতারণ আজ জীবিত নাই।” পিতার এই কথায় তাহার প্রতি পুত্রের শ্রদ্ধা বদ্ধিত হইল না, বরং সে যেন হৃদয়ে একটা 6वलनों अकूडत कब्रिन । কাত্যায়নীর সনির্বন্ধ অনুরোধসত্ত্বেও রাজেশ্বর এতদিন একমাত্র পুত্রের বিবাহ দেন নাই। কেন দেন নাই, তাহা কেবল তিনি জানিতেন। এখন তিনি শ্যামাচরণের একমাত্র সন্তান-দুহিতা রাধারাণীর সহিত পুত্রের বিবাহের প্রস্তাব করিয়া পাঠাইলেন । আমরা যে সময়ের কথা বলিতেছি, তখন বাঙ্গালার ভদ্রসমাজে অর্থ কৌলিন্য-মর্য্যাদার স্থান অধিকৃত করে নাই। তখন লোক “ঘর” দেখিত ; অদৃষ্ট বিশ্বাস করিত। রাজেশ্বরের অতীত দারিদ্র্য যেমন শ্যামাচরণের পক্ষে তাহার পুত্রকে জামাতা করিবার পক্ষে অন্তরায় ছিল না, তাহার। বর্ত্তমান সম্পদও তেমনই শু্যামাচরণের পক্ষে বিশেষ আগ্রহের উৎপাদন করে নাই। কিন্তু সম্পত্তি-সংগ্রহে রাজেশ্বরের ব্যবহার ও তাহার উদ্ধত গর্ব্ব শুষ্ঠামাচরণের নিকট নিন্দাহঁ বিবেচিত হইয়াছিল। তিনি এ প্রস্তাবে সম্মতিদান করিলেন না। রাজেশ্বর ইহাতে আপনাকে অত্যন্ত অপমানিত মনে করিলেন । তিনি মনে মনে বলিলেন, “তোমার পিতা আমার অপমান করিয়াছিলেন ; তাহার ফলে আজ। আমি রাজা রাজেশ্বর আমি এ অপমানের প্রতিশোধ লইব। তখন বুঝিবে, আমি কি করিতে পারি।” ।