পাতা:উভয় সঙ্কট - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
উভয় সঙ্কট।

করিলাম, তবুও কেহ কোন উত্তর দিল না। মৃতব্যক্তির একটা গোঁয়ানী শব্দ এই সময় আমাদের কর্ণে গিয়া পৌঁছিল। তখন আর বিলম্ব করিতে পারিলাম না, দরজা ভাঙ্গিয়া ফেলিলাম। বাড়ীর ভিতরে গিয়া দেখি, উপরে একটা গৃহের মধ্যে আলো জ্বলিতেছে। আমরা উপরে উঠিতে যাইতেছি, এমন সময় দেখি; একটা লোক বাড়ীর খিড়কীর দরজার দিকে অন্ধকারে পলাইতেছে। আমাদের সঙ্গে যে আলো ছিল, সেই আঁধার-আলো তখন সেই দিকে ধরা গেল। যেই আলো ধরা, লােকটা অমনি আমাদিগকে দেখিয়া আর পলাইল না, এক বিকট মুর্ত্তিতে আমাদের সম্মুখে দাঁড়াইল। বিস্ফারিত তাহার বড় বড় দুটা চক্ষু ক্রোধে তখন রক্তবর্ণ, হস্তে একটা পিস্তল, পিস্তলের লক্ষ্য সাহেবের দিকে। সে মুর্ত্তি দেখিয়া আমার প্রাণে বড় ভয় হইল, আর সেই লােকটাই যে এইমাত্র একটা খুন করিয়াছে, সে বিষয়ে আমাদের মনে আর কোন সন্দেহ রহিল না। লোকটা সেই স্থান হইতে চীৎকার করিয়া কহিল, “নৎ আও—হুঁই খাড়া রও, এক্ কদম্ আনেসে জান্ যাগা।”

 আমি ভয় পাইয়াছিলাম, কিন্তু এ অবস্থায়ও সাহেবকে ভীত দেখিলাম না। এই সময় হঠাৎ পিস্তলের দিকে আমার দৃষ্টি পড়িল। দেখিলাম, পিস্তলটা তে-নলা। আমরা একটা মাত্র আওয়াজ শুনিয়াছি, এখনও আরো দুইটা নল নিশ্চয়ই গুলিভরা আছে। মুহূর্ত্তের মধ্যে সেই কথা আমি সাহেবকে কাণে কাণে বলিলাম। আমার কথায় সাহেবের তখন চৈতন্য হইল; সাহেব বিপদ আশা করিয়া আর অগ্রসর হইলেন না। এই সময় আমি আরো ভাল করিয়া দেখিলাম—পিস্তলের লক্ষ্য