অনেকদিন এবার গ্রামে আসিনি। প্রায় মাস তিনেক হোল। এবার দেশে গরমও খুব। এতটুকু বৃষ্টি নেই কোনদিকে। দুপুরের দিকে হাওয়া যেন আগুনের হল্কার মত লাগে।
এবার গ্রামে এলে আমাদের ঘাটে নাইতে গিয়ে দেখি সল্তেখালী আম গাছটা ঝড়ে ভেঙে গিয়েচে। অবাক হয়ে দাঁঁড়িয়ে রইলুম কতক্ষণ। সল্তেখালী ঝড়ে ভেঙে গেল! ও যে আমার জীবনের সঙ্গে বড় জড়ানো নানাদিক থেকে। ওরই তলায় সেই ময়না কাঁঁটার ঝোপটা, যার সঙ্গে আবাল্য কত মধুর সম্বন্ধ।
সল্তেখালীর সঙ্গে আর দেখা হবে না। ওকে কেটে নিয়ে জ্বালানী করবে এবার হাজারি কাকা। সত্যিই আমার চোখে জল এল। যেন অতি আপনার নিকট আত্মীয়ের বিয়োগ অনুভব করলুম।
গাছপালাকে সবাই চেনে না। এতদিনের সল্তেখালী যে ভেঙে গেল, তা নিয়ে আমাদের পাড়ার লোকের মুখে কোনো দুঃখ করতে শুনিনি।
পথের পাঁচালীতে সল্তেখালীর কথা লিখেচি; লোকে হয়তো মনে রাখবে ওকে কিছুদিন।
খুকুদের কাল আসবার কথা গিয়েচে দু'ধার থেকে। আজও এল না, বোধহয় আবার জ্বর হয়ে থাকবে।
আজ বিকেলে বেলেডাঙার পথে বেড়াতে বার হয়েছি, পথে গিয়ে বসেচি গঙ্গাচরণের দোকানে, কবিরাজ মশায়ের সঙ্গে গল্পসল্প করচি, এমন সময়ে কি মেঘ করে এল সুন্দরপুরের দিক থেকে! গঙ্গাচরণ বল্লে খুব বৃষ্টি এল। অামি ওর দোকান থেকে বার হয়ে যেমন এসে বাঁওড়ের ধারের পথে পা দিয়েছি, অমনি বেলেডাঙার ওপারের বাঁশ বনের মাথার ওপর কালবৈশাখীর, মেঘের নীল নিবিড় রূপ দেখে থাকে দাঁঁড়িয়ে গেলাম। কোথা থেকে আবার একসারি বক সেই সময় নীল মেঘের কোলে কোলে উড়ে চলেছে-সে কি