পাতা:এপিক্‌টেটসের উপদেশ - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্বাভাবিক সংস্কার ও বিবেক বুদ্ধি।

আসক্ত হওয়াই আমাদের কর্ত্তব্য। কিন্তু তাহা না করিয়া আমরা নানা বিষয়ে আপনাকে আবদ্ধ করি। দারা সুত ধন জনে আমরা আসক্ত হইয়া পড়ি। এবং এইরূপে ভারগ্রস্ত হইয়া আমরা রসাতলের দিকে আকৃষ্ট হই। যদি পাড়ি দিবার মতো বাতাস না থাকে, আমরা নিরাশ হইয়া ক্রমাগত বাতাসের জন্য সতৃষ্ণভাবে প্রতীক্ষা করি। এখন উত্তরে বাতাস বহিতেছে; তাহাতে আমাদের কি আসে-যায়? পশ্চিমে বাতাস কখন্ বহিবে?—পবন-দেবের যখন কৃপা হইবে। বাতাসের কর্ত্তা তো তুমি নও—সে পবন-দেব। তবে এখন আমরা কি করিব? যাহা আমাদের নিজস্ব বস্তু তাহারই কিসে উন্নতি হয়,—সদ্ব্যবহার হয় তাহারই চেষ্টা করা আমাদের কর্ত্তব্য। এবং ঈশ্বর যাহার যেরূপ প্রকৃতি দিয়াছেন তদনুসারেই অন্য বস্তু সকলের ব্যবহার করাই তাহার পক্ষে যুক্তিসঙ্গত।

 শরীর যেরূপ বৈদ্যের প্রয়োগ স্থল, ভূমি যেরূপ কৃষকের প্রয়োগস্থল, এই বিবেক-বুদ্ধি সেইরূপ তত্ত্বজ্ঞানী সাধুজনের প্রয়োগস্থল অর্থাৎ সাধনক্ষেত্র। এবং প্রত্যেক পদার্থকে স্বকীয় প্রকৃতির অনুসারে ব্যবহার করাই তাঁহাদের কাজ। যাহা ভাল তাহা গ্রহণ করা, যাহা মন্দ তাহা পরিত্যাগ করা, এবং যাহা অনিশ্চিত তদ্বিষয়ে উদাসীন থাকা,—ইহাই আত্মা মাত্রেরই প্রকৃতি; বিক্রেতার হস্তে উচিত মূল্যস্বরূপ দেশের প্রচলিত মুদ্রা অর্পণ করিলেই সে যেরূপ ক্রেতাকে তাহার বিনিময়ে অভিলষিত পণ্য দ্রব্য প্রদান করিতে বাধ্য, সেইরূপ আত্মার নিকটে শ্রেয় উপস্থিত হইলেই, আত্মা তাহাকে না গ্রহণ করিয়া থাকিতে পারে না। আমাদের ইচ্ছাকে কিরূপ প্রয়োগ করি, কোন্ দিকে লইয়া যাই তাহার উপরেই আমাদের মঙ্গল অমঙ্গল নির্ভর করে। তবে আমরা অন্য বিষয়ের জন্য কেন এত উদ্বিগ্ন হই? যাহা তোমার আয়ত্তাধীন—যাহা তোমার