পাতা:কজ্জলী - পরশুরাম (১৯৪৯).pdf/৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দক্ষিণরায়

 চাটুজ্যে বলিলেন—‘রান্নাঘরের ভেতর মেসের ঝি বকুবাবুর পশমী আসনে — যেটা তাঁর গিন্নী বুনে দিয়ে- ছিলেন— তাইতে বসে তাঁরই থালায় লুচি খাচ্ছে, মেসের ঠাকুর তাকে বাতাস করছে। ঝি আধ হাত জিব কেটে দেড় হাত ঘোমটা টানলে। অন্য দিন হ'লে বকুবাবু কুরুক্ষেত্র বাধাতেন, কিন্তু আজ দেখেও দেখলেন না। চুপটি ক'রে ওপরে গিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়লেন।

 তার পর অগাধ চিন্তা। কি করা যায়? কোত্থেকে টাকা আসবে? তাঁর এক বিধবা পিসী হুগলিতে থাকেন, বিপুল সম্পত্তি, ওয়ারিস একটিমাত্র ছেলে ভুতো। ভুতো ছোঁড়া অতি হতভাগা, অল্প বয়সেই অধঃপাতে গেছে। কিন্তু পিসী তাকে নিয়েই ব্যস্ত, অমন উপযুক্ত ভাইপো বকুলালের দিকে ফিরেও তাকান না। বুড়ীর কাছে কোনও প্রত্যাশা নেই।

 বকুলাল ভাবলেন, ভগবানের কি বিচার! লক্ষ্মী-ছাড়া ভুতো হ’ল দশ লাখের মালিক, আর তারই মামাতো ভাই বকুর অদ্যভক্ষধনুর্গুণ। তাঁর ক্লাসফ্রেণ্ড— ঐ বজ্জাত রামজাদুটা—মক্কেল ঠকিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা উপায় করছে, আর তিনি একটি সামান্য চাকরির জন্যে লালায়িত। দুত্তোর ভগবান।

৮৯