পাতা:কথা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২
কথা

নিশ্চিন্ত নীরবে। “তুই হেথা কেন ওরে!”
মা শুধাল,—সে কহিল, “যাইব সাগরে।”
“যাইবি সাগরে, আরে, ওরে দস্যু ছেলে!
নেমে আয়!”—পুনরায় দৃঢ় চক্ষু মেলে'
সে কহিল দুটি কথা –“যাইব সাগরে।”
যত তার বাহু ধরি টানাটানি করে
রহিল সে তরণী আঁকড়ি। অবশেষে।
ব্রাহ্মণ করুণ স্নেহে কহিলেন হেসে
“থাক থাক্‌ সঙ্গে যাক।” মা রাগিয়া বলে
“চল্ তােরে দিয়ে আসি সাগরের জলে।”
যেমনি সে কথা গেল আপনার কানে
অমনি মায়ের বক্ষ অনুতাপবাপে
বিঁধিয়া কাঁদিয়া উঠে। মুদিয়া নয়ন
“নারায়ণ নারায়ণ” করিল স্মরণ।
পুত্রে নিল কোলে তুলি,—তার সর্ব্বদেহে
করুণ কল্যাণ হস্ত বুলাইল স্নেহে।
মৈত্র তারে ডাকি ধীরে চুপি চুপি কয়
“ছি ছি ছি, এমন কথা বলিবার নয়।”


রাখাল যাইবে সাথে স্থির হল কথা,—
অন্নদা লােকের মুখে শুনি সে বারতা,
ছুটে আসি বলে “বাছা, কোথা যাবি ওরে!”
রাখাল কহিল হাসি “চলিনু সাগরে,