পাতা:কথামালা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (সচিত্র).pdf/১২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১০
কথামালা

যাইতেছেন, আর তুই ঘোড়ায় চড়িয়া যাইতেছিস; তোর কিছুই বিবেচনা নাই?”

 কৃষকের পুত্র অতিশয় লজ্জিত হইল, এবং আপনি ঘোড়া হইতে নামিয়া, পিতাকে চড়াইয়া লইয়া চলিল। খানিক দূর গেলে পর কতকগুলি স্ত্রীলোক উপস্থিত হইল। তাহারা বলিল, “কে জানে এ মিন্সের কেমন আক্কেল; আপনি ঘোড়ায় চড়িয়া যাইতেছে, আর ছোট ছেলেটিকে হাঁটাইয়া লইয়া যাইতেছে।” বৃদ্ধ শুনিয়া লজ্জিত হইয়া, পুত্রকে ঘোড়ায় চড়াইয়া লইল॥ এইরূপে খানিক দূরে গেলে পর এক ব্যক্তি কৃষককে বলিল, “ওহে ভাই, তোমায় জিজ্ঞাসা করি, এ ঘোড়াটী কার?” কৃষক বলিল, “ও আমার ঘোড়া।” তখন সেই ব্যক্তি বলিল, “তোমার আচরণ দেখিয়া তোমার বলিয়া বোধ হইতেছে না। তোমার হইলে, তুমি উহার উপর এত নির্দয় হইতে না। কোন্ বিবেচনায়, এমন ছোট ঘোড়ার উপর দুইজনে চড়িয়া বসিয়াছ? ঘোড়াকে এতক্ষণ যেমন কষ্ট দিয়াছ, অতঃপর উহাকে কাঁধে করিয়া লইয়া যাওয়া উচিত।”

 এই ভৎর্সনা শুনিয়া, তাহারা পিতা পুত্রে ঘোড়া হইতে নামিল, দড়ি দিয়া ঘোড়ার পা বাঁধিল, এবং পায়ের ভিতরে বাঁশ দিয়া, কাঁধে করিয়া লইয়া চলিল। বাজারের