পাতা:কথামালা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (সচিত্র).pdf/৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কথামালা
২৫

 ব্যাধেরা প্রস্থান করিলে পর, শৃগাল কুটীর হইতে বহির্গত হইয়া, চুপে চুপে চলিয়া যাইতে লাগিল। ইহা দেখিয়া কৃষক, ভর্ৎসনা করিয়া শৃগালকে বলিল, যাহা হউক, ভাই, তুমি বড় ভদ্র! আমি বিপদের সময়, আশ্রয় দিয়া, তোমার প্রাণরক্ষা করিলাম। কিন্তু তুমি, যাইবার সময়, আমায় একটা কথার সম্ভাষণও করিলে না। শৃগাল বলিল, ভাই হে, তুমি কথায় যেমন ভদ্রতা করিয়াছিলে, যদি অঙ্গুলিতে সেইরূপ ভদ্রতা করিতে, তাহা হইলে, আমিও তোমার নিকট বিদায় না লইয়া, কদাচ কুটীর হইতে চলিয়া যাইতাম না।

এক কথায় যত মন্দ হয়, এক ইঙ্গিতেও তত মন্দ হইতে পারে।

ব্যাধগণ—শিকারিগণ।
এ যাত্রা—এবার।
অবিলম্বে—শীঘ্র, সত্বর।
চুপে চুপে—নিঃশব্দে, আস্তে আস্তে।
বিপদ-আপদ।
ভদ্রতা—শিষ্টাচার, শিষ্টতা।

আশ্রয়—থাকিবার স্থান।
পরিত্রাণ—রক্ষা, নিষ্কৃতি।
সঙ্কেত—ইসারা, ইঙ্গিত।
ভর্ৎসনা—তিরস্কার।
সম্ভাষণ—আলাপ।
বিদায়—গমনানুমতি।






কাক ও জলের কলসী।

এক তৃষ্ণার্ত্ত কাক, দূর হইতে জলের কলসী দেখিতে পাইয়া, আহ্লাদিত হইয়া, ঐ কলসীর নিকটে উপস্থিত হইল, এবং জলপান করিবার নিমিত্ত, নিতান্ত ব্যগ্র হইয়া, কলসীর ভিতর ঠোঁট প্রবেশ করাইয়া দিল। কিন্তু,