পাতা:কথামালা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (সচিত্র).pdf/৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৮
কথামালা


শাকুনিক—ব্যাধ, পাখিমারা
অঙ্গীকার—স্বীকার
আত্মীয়——স্বজন


বিনয়বাক্যে-নম্রকথায়।
পরিবর্ত্তে-বদলে।
সর্ব্বনাশ—অমঙ্গল।





দুঃখী বৃদ্ধ ও যম।

এক অতি দুঃখী বৃদ্ধ ছিল। তাহার জীবিকানির্বাহের কোনও উপায় ছিল না। সে বনে কাঠ কাটিয়া ও কাঠ বেচিয়া, অতি কষ্টে দিনপাত করিত। গ্রীষ্মকালে, একদিন মধ্যাহ্ন-সময়ে, সে কাঠের বোঝা মাথায় করিয়া, বন হইতে আসিতেছে। ক্ষুধায় পেট জ্বলিতেছে তৃষ্ণায় ছাতি ফাটিতেছে; প্রখর রৌদ্রে সর্ব্বশরীর দগ্ধপ্রায় গলদঘর্ম হইতেছে; তপ্ত ধূলি ও বালুকাতে দুই পা পুড়িয়া যাইতেছে। অবশেষে, নিতান্ত ক্লান্ত হইয়া, কাঠের বোঝা ফেলিয়া, সে এক বৃক্ষের ছায়ায় বিশ্রাম করিতে বসিল। কিয়ৎক্ষণ পরে, সে মনে মনে বলিতে লাগিল, এরূপ ক্লেশভোগ করিয়া বাঁচিয়া থাকা অপেক্ষা, মরিয়া যাওয়া ভাল; কেনই বা আমার মরণ হয় না; আমার মত হতভাগ্য লোকের মরণ হইলেই মঙ্গল।

 মনের দুঃখে এইরূপ আক্ষেপ করিয়া, সেই চিরদুঃখী, যমকে সম্বোধিয়া বলিতে লাগিল, যম, তুমি আমায় ভুলিয়া আছ কেন? শীঘ্র আসিয়া আমায় লইয়া যাও; তাহা হইলেই আমার নিষ্কৃতি হয়। আর আমি ক্লেশ