পাতা:কমলা - আশুতোষ ভট্টাচার্য্য.pdf/১২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

दकाढ কহিল না । নীলকমল দেখিলেন, অনেক দিনের পরে সে আজ ভাল কাপড় পরিয়াছে, ভাল জামা গায়ে দিয়াছে, তাহার মুখখানিও আজ বেশ প্ৰফুল্প } বিরাজ বাড়ী হইতে বাহির হইয়া একাকী গঙ্গাতীরের দিকে চলিল এবং তীরে আসিয়া বেশ একটু নির্জন স্থান খুজিয়া লইয়া বসিল । সুধাংশু বাড়ী স্থির করিয়া পত্ৰ দিয়াছে। বিরাজ আজই রাত্ৰিযোগে কমলাকে লইয়া যাত্ৰা করিবার সঙ্কল্প করিয়া গৃহ হইতে বিদায় লইতে আসিয়াছে। তাহার মনটা আজ সত্য সত্যই বেশ প্ৰফুল্ল । সন্ধ্যার প্ৰতীক্ষায় সেই স্থানে বসিয়া সে সহর্ষ্যমনে গঙ্গার তীরশোভা দেখিতে লাগিল । শরতের রবি অস্ত যাইতেছিল । বর্ষাধৌত তীরতরুরাজির স্নিগ্ধ নীর্লিমার উপরে অস্তমান সুৰ্য্যের হৈম রশ্মি পতিত হইয়া উজ্জ্বল ও মধুরের একটা মনোহর সমাবেশের সৃষ্টি করিয়াছিল। কৰ্ম্মশ্ৰান্ত ধরণীর জলে, স্থলে ও অন্তরীক্ষে সর্বত্রই যেন কেমন একটা মধুর ও সুন্দর অবসাদের ভাব লক্ষিত হইতেছিল। সায়াহ্নের শীকরবাহী মৃদু সমীরণ যেন কোন প্ৰাণায়ামনিরত মহাযোগীর রেচক-শ্বাসের ন্যায় অতি ধীরে ও একভাবে বহিতেছিল। কোথাও একটু চঞ্চলতা নাই; কেবল নাগরাভিসারিণী সুবৰ্ণালঙ্কত সৌন্দৰ্য্যগৰ্ব্বিতা পূর্ণযৌবনার ন্যায় সাগরাভিসারিণী স্বর্ণরবিকর্যমণ্ডিত পূর্ণসলিলা ভাগীরথীর তরঙ্গস্ফীত বক্ষে ঈষৎ চঞ্চলতা লক্ষিত হইতেছিল। ক্রমে, সন্ধ্যা হইল। দিবালোক নিৰ্ব্বোধ চিরক্রিয়ের কাৰ্য্য অসমাপ্ত রাখিয়া, তাহার আর এক দিনের আয়ু, হরণ করিয়া প্রদোষের ছায়ায় মিশাইয়া গেল। প্রতীচী দিগবন্ধু সায়াহ্নের সিন্দূরশোভা তিমিরাবগুণ্ঠনে ঢাকিয়া দিল। নক্ষত্ররাজি নীল আকাশে ফুটিয়া উঠিল। তীরন্দ্ৰনালী ১২২] ,