পাতা:কমলা - আশুতোষ ভট্টাচার্য্য.pdf/১৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কমলা “শুধু আমাকে বলা!-তোমার সঙ্গে আমার মনের কথাটা মেলে কি না দেখি ;-কি বল দেখি ?”-বলিয়া সুধাংশু তরঙ্গিণীর কাছে আরও একটু সরিয়া বসিল। তরঙ্গিণী তাহার কাণের কাছে মুখ আনিয়া খুব নিয়স্বরে কি বলিল । r হৃদয়ে তীক্ষ শার বা গুলির আঘাত লাগিলে সুপ্ত ব্যান্ত্র যেমন লাফাইয়া উঠে, সুধাংশু সেইভাবে একবারে দাড়াইয়া উঠিয়া গৰ্জন করিয়া বলিল, “নিশ্চয়ই তাই ।” তরঙ্গিণী চাহিয়া দেখিল, সুধাংশুর খোঁচা খোচা চুলগুলি যেন শজারুর কঁাটার মত দাড়াইয়া উঠিয়াছে, বড় বড় চক্ষুদুটি জবাফুলের মত লাল হইয়া উঠিয়াছে, বিশাল বক্ষঃ ঘন ঘন স্ফীত হইয়া খুব জোরে জোরে নিঃশ্বাস বহিতেছে। তাহার ভাব দেখিয়া পারুলের মুখখানি ভয়ে শুকাইয়া গেল ; সে তার মায়ের কাছে একটু সরিয়া বসিল। তরঙ্গিণী বলিল, “দ্যাখ ঠাকুরপো ! —শুধু একটা সংশয়ে ভর ক’রে এখন মিছে একটা হৈ চৈ ক’রে নি, তাকে খুজে বার ক’রে তারপর যা মনে আছে ক’রো ; এখন ভালমানুষটির মত বাড়ীতে যাও!-- নাওয়া খাওয়া বােধ করি কিছুই হয় নি?” । । সুধাংশু ক্রুদ্ধ ভুজঙ্গের মত একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলিয়া বলিল, “নাওয়া খাওয়া ? - সে সব আজ থেকে পথে পথে বউঠাকুরুণ -বাড়ীতে এখন আর কি জন্যে যাব ? যে বাড়ীতে , বউদিদির স্থান হয় নি, দাদা যে বাড়ী ছেড়ে পালিয়ে গেছেন, সে বাড়ীর অন্ন আমার অভোজ্য, জল অপেয়।-আমি যাই, দেখি যদি তাঁদের কোন সন্ধান করতে পারি। তাদের যদি খুজে ফিরিয়ে আনতে পারি। তবেই আবার দেশে ফিরব, নইলে তোমাদের সঙ্গেও এই শেষ দেখা !” : هسیلا ]