পাতা:কমলা - আশুতোষ ভট্টাচার্য্য.pdf/৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কমলা অনেকের বক্ততা ও গান শুনিতে পাইতাম না এবং এই প্রকারের অনেক গ্ৰন্থ ও প্রবন্ধাদিও অপ্রকাশিত থাকিয়া যাইত। মোহিনী আদর্শীতলে আপনার প্রতিবিম্ব দেখিয়া ভাবে-“রংটা কালোই ভাল ; এই যে কেঞ্চ ঠাকুরের-শ্যামা ঠাকুরুণের এই জগৎ আলো করা কালো রং ! কটা রংটা কি ?-গাময় যেন কুঠ হ’য়েছে ব’লে মনে হয়!—মুখের মাঝখানে পাহাড়ের মত একটা উচু নাক আর তবলার চাব্দীর মত দুটো বড় বড় চোখ কি ভাল ?-ছিঃ ! বড় নাক নিয়ে উপুড় হ’য়ে শোবারই জো নেই-থ্যাবড়া নাকের কোন জ্বালাই নেই। --দাত যদি ঠোটেই ঢাকা রইল। তবে আর তার বাহারটা কি ? হাসলে দাত বেরিয়ে পড়ে তাই হাসিমুখ দেখতে ভাল ; আমার মত যাদের দাত একবার ও ঠোটে ঢাকা পড়ে না। তাদের মুখ কতই সুন্দর- যেন সদাই হাসছে!”—ইত্যাদি নানা প্রকার যুক্তির বলে মোহিনী আপনাকে অসাধারণ সুন্দরী মনে করিয়া থাকে । একটা বিষয়ে মোহিনীর বড় ক্ষোভ ছিল। কেহ তাহাকে ভালবাসে না, আদর যত্ন করে না, এমন কি তাহার নামটি পৰ্য্যন্ত কেহ ভাল করিয়া বলিতে চাহে না-পরোক্ষে “মনী দাসী’ ও সমক্ষে “মিনী’ ভিন্ন কেহ তাহাকে “মোহিনী’ পৰ্য্যন্ত বলিত না। হীরালাল কেবল তাহার পুৱা নাম ধরিয়াই ডাকিয়া থাকে। মোহিনী হীরালালের সেই মৌখিক সাদর সম্ভাষণকেই আন্তরিক প্রীতির আহবান ভাবিয়া লইয়া আনন্দে গলিয়া যায়। নীলকমলের গৃহচ্ছিদ্রান্বেষী হীরালাল তঁহার ঘরের কথা শুনিতে ভালবাসে, ভালবাসার কাঙ্গালিনী মােহিনী দিনান্তে একবার গঙ্গাজল আনিবার ছলে হীরালালের সঙ্গে দেখা করিয়া তাহাকে সেই সব কথা শুনাইয়া আইসে এবং তাহাতেই যেন কেমন একটু আনন্দও পায়। দুষ্ট লোকে তাহার সে নির্দোধ ७8