পাতা:করুণা - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/১০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পঞ্চদশ পরিচ্ছেদ > * > ‘l, শুভ্ৰ মৰ্ম্মরের ঘট্টায় আসিয়া লাগিল। কৃষ্ণগুপ্ত তীরে দাড়াইয়া মৃৎপাত্রের দিকে অঙ্গুলি সঞ্চালন করিলেন, তৎক্ষণাৎ নৌকা হইতে চারিজন নাবিক জলে লম্ফ প্রদান করিল এবং দগ্ধ মৃদ্‌ভাণ্ডের নিম্ন ইহতে একজন কৃশকায় গৌরবর্ণ যুবককে টানিয়া তুলিল। মহাপ্ৰতীহার জিজ্ঞাসা করিলেন, “এ ব্যক্তি কে, বলিতে পার ?” একজন নাবিক কহিল “এ ব্যক্তি, চন্দ্রসেন ।” “চন্দ্রসেন কে ?” “ইন্দ্রলেখার জার।” মহা প্রতাঙ্গর পুনৰ্ব্বার ইঙ্গিত করিলেন, নাবিকগণ চন্দ্রসেনের મૂશ, হস্তপদ বন্ধন করিয়া তাহাকে নৌকায় উঠাইয়া লইয়া গেল। তখন সোধমধ্যে সাম্রাজ্যরক্ষার মন্ত্রণা শেষ হইয়াছে। দামোদর শৰ্ম্ম সমাটের আদেশ লিপিবদ্ধ করিয়াছেন, সম্রাট তাঙ্গ স্বাক্ষর করিতেছেন। এই সময়ে কৃষ্ণগুপ্ত ফিরিয়া আসিলেন। চক্ষুর ইঙ্গিতে মঙ্গমাত্য জিজ্ঞাসা করিলেন “কি হইয়াছে ?” ওষ্ঠের উপরে অঙ্গুলি স্থাপন করিয়া মঙ্গপ্রতীহার জ্ঞাপন করিলেন, সংবাদ গোপনীয়, পরে জানাইরেন । পত্রে স্বাক্ষর করিয়া সম্রাট আসন ত্যাগ করিলেন এবং যুবরাজের হস্তধারণ করি। কনিষ্ঠ ভ্রাতার সম্মুখে গিয়া কহিলেন, “গোবিন্দ, স্কন্দ কখন যুদ্ধে ব্ৰতী হয় নাই, তাতাকে সৰ্ব্বদা তোমার পাশ্বে রাখিও । আমাকে স্পর্শ করিয়া শপথ কর” । মহারাজপুত্র ঈষৎ হাস্ত করিয়া কহিলেন, "দাদা, বিচলিত হইতেছেন কেন ?” আবেগে সম্রাটের কণ্ঠরুদ্ধ হইয়া আসিল, তিনি কহিলেন, “ভাই, মনে হইতেছে বিপদ নিকটবৰ্ত্তী, তুমি ও সাবধানে, থাকিও আত্মরক্ষার চেষ্টা করিও, আবার পাটলিপুত্রে আসিও—” সম্রাটের কণ্ঠরুদ্ধ হইল, তিনি কনিষ্ঠ ভ্রাতা ও পুত্রকে দৃঢ় আলিঙ্গনে আবদ্ধ করিলেন । সৌধমধ্যে উপস্থিত পুরুষমাত্রেই বিচলিত হইয়াছিলেন। বৃদ্ধ, বিজ্ঞ, বহুদৰ্শী, রাষ্ট্রনীতিকুশল মহামাত্যের শীর্ণ গণ্ডস্থল বহিয়া অশ্রুধারা প্রবাহিত হইতেছিল। অগ্নিগুপ্ত মুখ ফিরাইয়া উত্তরায়ে চক্ষু মার্জন করিতেছিলেন। কিয়ৎক্ষণু পরে ভানুমিত্রের হস্তধারণ করিয়া সম্রাট