পাতা:করুণা - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/২২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ミ>や করুণ। “বাবা, জগতে এমন কেহ নাই যে, করুণার অঙ্গে হস্তক্ষেপ করে ।” সেই সময়ে,হুণগণ অট্টালিকা বেষ্টন করিল, সশব্দে কাষ্ঠনিৰ্ম্মিত দ্বার ভাঙ্গিয়া গেল, দেখিতে দেখিতে শতাধিক হ্রণ গৃহমধ্যে প্রবেশ করিল। তাহার কক্ষমধ্যে করুণাকে , দেখিয়া উল্লাসে চীংকার করিয়া উঠিল। একজন কক্ষে প্রবেশ করিয়া করুণার দিকে অগ্রসর হইল, তখন সেই প্রেতভীতিবিচলিত উদরপরায়ণ গোঁড়ায় ব্রাহ্মণ সহসা ক্ষিপ্ত হইয়া উঠিল এবং অনায়াসে তাহার গ্রীবা ধারণ করিয়া তাহাকে দূরে নিক্ষেপ করিল। একের স্থানে দশজন হণ কক্ষে প্রবেশ করিল, নিরস্ত্র ঋষভ করুণাকে রক্ষা করিতে গিয়া আহত হইলেন, দক্ষিণ হস্ত স্কন্ধচু্যত হইল, পদে শূল বিদ্ধ হইল, অবশেষে গদাঘাতে চেতনা বিলুপ্ত হইল ; তখন হুণগণ করুণার হস্ত ধারণ করিয়া তাঙ্গকে লইয়া চলিল। গৃহত্যাগকালে শুদ্ধনেত্ৰে শুদ্ধকণ্ঠে করুণাদেব কঠিলেন,“বাবা, মিত্রবংশের অন্নঋণ তুমি পরিশোধ করিলে ” তখন নগর অধিকৃত হইয়াছে, নাগরিকগণ নিহত হইয়াছে, বৃদ্ধ ও শিশুগণ দগ্ধ হইয়াছে – আর রূপবতী যুবতাগণ আবদ্ধ হইয়। রাজপথে আনীত হইয়াছে। যাহার করুণাকে বন্দী করিয়াছিল, তাহারা তাহাকে লইয়া সেই স্থানে আনয়ন করিল। কিয়ুৎক্ষণ পরে একজন হ্রণনায়ক হতভাগিনী বন্দিনাদিগকে শ্রেণীবদ্ধ করিলেন । যাহারা রূপলাবণ্যবিহীন তাচার সেনাগণের জন্য রহিল, অধিকতর সুন্দরীগণ নায়কগণের অংশে পড়িল । সৰ্ব্বাপেক্ষ সুন্দরী পঞ্চবিংশ রমণী হূণরাজের ভোগের জন্ত নির্দিষ্ট হইলেন । দহমান পুরুষপুর নগরের কেন্দ্রে বিস্তৃত প্রান্তরে হুণরাজ বিশ্রাম করিতেছেন, চারিদিক হইতে অগ্নিশিখা গগনম্পর্শ করিতেছে, প্রান্তরের চারিদিকে লুণ্ঠনলব্ধ দ্রব্যসম্ভার,—হ্ণরাজ রমণীগণের প্রতীক্ষা করিতেছিলেন। পূৰ্ব্বোক্ত নায়ক বন্দিনীগণকে হূণরাজের সম্মুখে আনয়ন করিলেন। হুণরাজ একে একে তাহাদিগকে পরীক্ষা করিয়া করুণাদেবীর অঙ্গে হস্তক্ষেপণ করিলেন, পরুষ বৰ্ব্বরম্পর্শে করুণা শিহরিয়া উঠিলেন।