পাতা:করুণা - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/২৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুর্দশ পরিচ্ছেদ । ミb"> চতুর্দিক বেষ্টন করিয়া মঠনিৰ্ম্মিত হইয়াছিল ; পাষাণনিৰ্ম্মিত মঠের স্নিগ্ধ অলিন্দের শীতল ছায়ায় বসিয়া বন্ধুবৰ্ম্ম বিশ্রাম করিতেছিলেন। তিনি সন্ন্যাসীকে দেখিয়া আসন ত্যাগ করিলেন, স্কন গুপ্তকে দেখিয়া শতাধচিহ্নিত মুখে ঈষৎ হাস্তের রেখা দেখা দিল"। সৰ্ব্ব পশ্চাতে অরুণাদেবী আসিতেছিলেন, তাকে দেখিয়া মালবরাজ শিঙ্গরির উঠিলেন, পরক্ষণেই দীর্ঘ অসি কোষমুক্ত হইল, ফলক ললাট স্পর্শ করিল। বজ্ৰগম্ভারকণ্ঠে বন্ধুবৰ্ম্ম বলিয়া উঠিলেন, “মহাদেবীর জয় ইউক ।” দরে আম্রকাননে শতদ্র-সৈকতের ভীষণ যুদ্ধের শত বীর বিশ্রাম করিতেছিল, ৫াগর সে জয়ধ্বনি শুনিল ; শতকণ্ঠে উচ্চারিত মহাদেবী অরুণার জয়ধ্বনিতে গগন বিদীর্ণ হইল, অশ্রুধারায় দুঃখিনী অরুণার গণ্ডদ্বয় প্লাবিত হইল। তখন নালনভঃস্থলের এক অজ্ঞাত কোণে ভাগ্য দেবতা হাস্ত করিতেছিলেন । জয়ধ্বনি প্রশমিত হইলে নেত্র মা জনা করিয়া অরুণা বন্ধুবৰ্ম্মাকে কভিলেন, “নীলবরাজ, সহকার তরুতলে বসিয়া কতদিন স্বপন ঘোরে এই দৃপ্ত দেখিয়াছি।” বন্ধুবন্ম হাসিয়া কঠিলেন, “দেধি, আজি স্কন্দের মুখে যে দীপ্তি দেখিতেছি, তাহা বহু দিন দেখি নাই। বাহুলকাতীরে, কপিশায়, গন্ধারে, পুরুষপুরে, শতদ্রুতীরে কতবার মনে হইয়াছে, যুবরাজের মুখের সে প্রশান্ত ভাব আর কি কখনও ফিরিবে ? আজি তোমার দর্শনে সে দীপ্তি ফিরিয়াছে ; দেবি, তুমি গুপ্তকুললক্ষ্মী, তুমি বিচলিত হইয়াছিলে সেইজন্ত , সাম্রাজ্য রসাতলের পথে অগ্রসর হইয়াছিল। ফিরিয়া চল দেবি, দেশে শান্তি ফিরিয়া আসুক, আমি মালবে--” * 3. “দুর্গ স্বামিনীর নিকট ফিরিয়া যাই ।” যুবরাজ এই কয়টি কথা বলিয়া মুখ ফিরাইলেন। অশ্র-অন্ধনেত্রে বন্ধুবৰ্ম্ম তাহাকে দৃঢ় বাহুপাশে আবদ্ধ করিয়া কছিলেন, “তাহাই হউক স্কন্দ, সেও দীর্ঘকাল প্রতীক্ষা করিয়া আছে।”