পাতা:কাব্যের কথা - চিত্তরঞ্জন দাশ.pdf/৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(tR কাব্যের কথা এমন করিয়া ভাব রাজ্যের খেলার সৃষ্টিতে সহজ সরল রূপে সত্যরূপে রূপান্তর হইয়া উঠিল। কবির ভাব জাগ্ৰত মূৰ্ত্তি ধরিল, কবি যে স্রষ্টা কবি যে ভবিষ্যৎ গড়িয়া তুলে। চণ্ডিদাস সেই রূপান্তরের স্রষ্টা । বাঙ্গলার গীতি-কবিতার যদি আদর্শ থাকে, প্ৰাণ থাকে, তবে ইহা বাঙ্গলার নিজস্ব শ্রেষ্ঠ সম্পত্তি। চণ্ডিীদাসের গান আর মহাপ্রভুর জীবন ইহাই বাঙ্গলার সর্বশ্রেষ্ঠ গৌরব। শ্ৰীচৈতন্য মহাপ্রভুর আবির্ভাবে বাঙ্গলা গানে ও প্ৰেমে মাতিয়া উঠিয়াছিল। চণ্ডিদাসের গৌড়ীয় যুগে যে সকল রসের লীলায় দেশ মুখরিত হইয়া উঠিয়াছিল, শ্ৰীগৌরাঙ্গের আবির্ভাবের পর তাহার ব্যাপ্তি ও পরিধি আরো বাড়িয়া উয়াঠিছিল, আরো সাৰ্ব্বজনীন হইয়া সেই ভাব গানে, জীবন ও কৰ্ম্মে মধুর হইয়া উঠিয়াছিল। ভাগবতে ভগবানকে শুধু যুগলরস-মূৰ্ত্তিতে দেখে নাই, তাহার ভিতর সৃষ্টি-স্থিতি-প্ৰলয়ের রসাবতারণা আছে । লীলা। এই বিশ্বের চরমের মধ্য দিয়া শুধু মধুরেই মিলায় নাই ; তাহাতে কল্যাণ ও মঙ্গলের কথাও আছে। গৌড়ীয় বৈষ্ণব যুগে তাহার কিছু কিছু সাধনাও হইয়াছিল। এই ভাগবত ধৰ্ম্মের সঙ্গে রামানুজ ও মাধেবার ভাব শ্ৰীচৈতন্তের আবির্ভাবের সঙ্গে সঙ্গে দেশে আসিয়াছিল। মহাপ্ৰভু তাহাকে আপনার করিয়া লইয়া নিজেতে তাহার সমন্বয় করিয়াছিলেন । কিন্তু তঁহার জন্মের পর, আমরা যে সমস্ত পদাবলী সাহিত্যের গান পাই, তাহাতে সেই পূর্বকার যুগল সম্বন্ধের কথার ভিতর দিয়াই পৌছিতে চেষ্টা করিয়াছেন। সেই রূপান্তরই তাদের আদর্শ ছিল বটে, কিন্তু মহাপ্ৰভু যে পাপীর উদ্ধারের নূতন কাঞ্চাটি আনিলেন, কাব্যে তাহার চরম পরিণতি ও রূপান্তর হয় নাই। জ্ঞানদাস, গোবিন্দদাস প্ৰভৃতি কবিরা সেই পথের পথিক হইয়াই চলিয়াছেন, চণ্ডিদাস হইতে কেহই অগ্রসর