পাতা:গৃহশ্রী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ஏ5இ S(V ধান্য । চণ্ডীদাসের গানে আছে,-“আমি শ্যাম-অনুরাগে এ দেহ সপিন্ত, তিল-তুলসী দিয়া।” তিল-তুলসী দিয়া যে দান করা যায়, তাহার উপর কোনই স্বত্ব থাকে না। ভগবানকে যদি এ দেহ দান করিয়া বলা যায়, “আমার চক্ষু-কর্ণ তোমারই আদেশে চলিবে, এ দেহ, হে কর্ণধার, তুমি যে ভাবে চালাইবে, সেই ভাবেই চলিবে—“আমি ইহার মালিক নই, আজ হইতে স্বত্বত্যাগ করি যা এ দেহ তোমাকে দিলাম”, তখন আর এই দৈহিক সুখের জন্য মাথা কুটিতে হইবে না,-কোন ভয় বা সন্তাপ ইহাকে ছুইতে পরিবে না । “আমি তাহাকে ইহা দিয়া ফেলিয়াছি”, এই চিন্তা করিয়া প্ৰতি কাৰ্য্যে তঁাহার আজ্ঞা স্মরণ রাখিয়া চলিলে বিপদ কোথায় ? তিনি অভয় দিতে আসিয়া তোমার স্বেচ্ছাচার দেখিয়া ফিরিয়া যান-যে পাদপদ্মের প্রভায় তোমার জীবন উজ্জল হইবে, তাহা তোমার মাথার কাছেই আছে। দেহকে পবিত্ৰ কর, সেই দেহেই তাহার বেদী হইবে। তখন বিদ্যাপতির কথায় বলিতে পরিবে,-“বেদী করব হাম আপন অঙ্গমে, ঝরু কয়ুব তাহে চিকুর বিছানে।” এই দেহ বেদী হইবে এবং মাথার চুল, যাহা এত গৌরবের জিনিস, তা”র দ্বারা ঝাটা বানাইয়া সেই বেদী পরিষ্কার করিব, অর্থাৎ আমার যত পার্থিব-গৌরব, তাহা তুচ্ছাতিতুচ্ছ মনে করিয়া তাহারই পদধূলির জন্য অপেক্ষা করিয়া থাকিব। তঁহারই জন্য পথের দিকে চাহিয়া থাকিতে হইবে, তাহা হইলে কোন শ্যাম-সন্ধ্যায়, বা নিস্তব্ধ রজনীতে, বা প্ৰাতের শুভ্ৰ শেফালিকার পতন-শব্দে-হয় তা সত্য সত্যই এই হৃদয়কুঞ্জে র্তাহার পাদক্ষেপ শোনা যাইতে পরিবে ; তখন দশ ইন্দ্ৰিয় ধন্য হইয়া তাহাকে সংবৰ্দ্ধনা করিতে দাড়াইবোঁ,-তখন জীবনে যাহা কিছু বিফল হইয়াছে, তাহা সফল হইবে, এবং যত কিছু দুঃখ, তাহা সৌভাগ্যের আত্মদান